জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

দেশে বিনিয়োগ করুন: প্রধানমন্ত্রী

এবিএনএ: অধিক বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের দেওয়া ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক লাগোয়ার্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশি প্রবাসীরা মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশের এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন উদ্দীপনা প্যাকেজ ও অন্যান্য সুবিধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশি এবং আমেরিকানরা এ থেকে লাভবান হতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং প্রবাসীরা এতে আরও সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সবাইকে ভালো সুযোগ দিচ্ছি। প্রবাসীদের অন্যদের তুলনায় আরো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং তারা এ সুযোগটি গ্রহণ করতে পারেন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।’

দেশে বিনিয়োগ করুন: প্রধানমন্ত্রীদেশের গণমাধ্যমের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পত্রিকা শুধু নেতিবাচক কথা লিখবে, আর ভালো কথা লিখবে না, সেটা তো হয় না। পত্রিকা অপবাদ ছড়াবে শুধু, আর কনস্ট্রাকটিভ কথা বা বেশিরভাগ লোকজনই ভালো, সেই কথা বলবে না, সেটা তো হয় না। কাজেই দায়িত্বশীলতা সবদিক থেকে সবার সমানভাবে থাকা লাগবে।’ আওয়ামী লীগ সরকার ‘অনেকগুলো গণমাধ্যমের অনুমতি দিয়ে বলার ও লেখার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তবে ‘মিথ্যা অপবাদ’ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত যেন না করা না হয়, সেদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। এর আগে একই স্থানে প্রবাসীদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে তাঁর হোটেল কক্ষ থেকে ভার্চুয়াল যোগদান করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কি হয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান। সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং ১ অক্টোবর তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

দেশে বিনিয়োগ করুন: প্রধানমন্ত্রীশুক্রবার নিউ ইয়র্কের ম্যারিয়ট হোটেলে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। সভায় তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে দেড়শ সুটকেস নিয়ে সৌদি আরব চলে গিয়েছিল এবং সেখানে লকার ভাড়া করে নাকি অনেক জিনিস রেখে এসেছিল শোনা যায়। তখন সেটা প্রচার হয়েছিল। সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যাদের এই সমস্ত বদ অভ্যাস তারা সবাইকে, মানে নিজে চোর, সবাইকে ওই রকমই মনে করে। এটা হল তাদের চরিত্র। এই ধরনের কথা তারা ছড়ায়, মনে করে যে এটা বোধহয় খুব প্রচার করতে পারবে।

সমালোচনাকারীরা একটা কথা ভুলে যায় যে আমি জাতির পিতার মেয়ে। আমরা দেশের জন্য কাজ করি, আর ক্ষমতাটা আমাদের কাছে দেশসেবা করা, মানুষের সেবা করা। আমরা অর্থ সম্পদের জন্য লালায়িত না। বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তাদের সন্তানরা ক্ষমতাটাকে ভোগের জায়গা বানিয়েছে। ক্ষমতাটাকে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার জায়গা বানিয়েছে। আর আমাদের কাছে ক্ষমতা হচ্ছে মানুষের ভাগ্য গড়া, বাঙালির ভাগ্য গড়া, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়া। দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গত শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ফিনল্যান্ডে দুদিন যাত্রা বিরতি শেষে রোববার নিউ ইয়র্কে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। ফিরতি যাত্রায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা হয়ে ফিনল্যান্ডে যাত্রা বিরতির পর ১ অক্টোবর তিনি দেশে ফিরবেন।

করোনাভাইরাস মহামারীকালে এই সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টার ফ্লাইট ব্যবহার করছেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে তার ব্যাখ্যাও দেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ড্রিমলাইনার, সেটা নিয়েই আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। কেন এসেছি? দুটো কারণ। একটা হচ্ছে যে আমি যদি এই করোনার সময় অন্য এয়ারলাইন্সের টিকেট করি, তাহলে তাদেরকে টাকা দিতে হয়। আর আপনারা জানেন আন্তর্জাতিক রুটগুলো করোনার কারণে বন্ধ ছিল। আমাদের বিমানগুলো বসেই ছিল। আর একটা বিমান বসে থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণে একটা বিরাট টাকা খরচ হয়।

এজন্যই আমি বললাম, আমরা অন্য এয়ারলাইন্সকে টাকা না দিয়ে আমাদের বিমান নিয়ে আসব। কারণ ওরা তো দেশে বসে আছে। কাজেই আমাদের সঙ্গে আসলো আর ঘরের টাকা ঘরেই থাকল, বিমানই পেল। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে নিউ ইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালুর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। “আমাদের লক্ষ্য যে নিউ ইয়র্কে অন্তত আমাদের নিজেদের বিমান আসবে। সেটাও আমরা আনতে চাই জেএফকে (জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) তে ল্যান্ডিং করার প্র্যাকটিসটাও হয়ে গেল। ভবিষ্যতে তো আসব। কাজেই তার প্র্যাকটিসটা এখানে থেকেই করে গেলাম। বিমানের অবস্থা এক সময়ে ‘ঝরঝরে’ ছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে বিমানের সীমাহীন দুর্নীতি ছিল। এই পর্যন্ত প্রায় ১১টা বিমান আমরা ক্রয় করেছি, আজকে আমাদের ২১টা বিমান।

 

Share this content:

Related Articles

Back to top button