জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

দেশে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন বঙ্গবন্ধু: প্রধানমন্ত্রী

এবিএনএ: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীদের নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল বঙ্গবন্ধুর, সেটা অনেকটা পূরণ হয়েছে। শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবসে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। এর আগে সমাজে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে ‘বেগম রোকেয়া পদক’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার যে প্রত্যাশা ছিল সেটা অনেকটাই পূরণ হয়েছে। নারীর অধিকার রক্ষা ও ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু নারীদেরকে মর্যাদা দিয়েছেন। নারীদের চাকরির জন্য ১০% কোটার ব্যবস্থা করেছেন। বাংলাদেশে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে জুডিশিয়াল সার্ভিসে চাকরি করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এখন সব সেক্টরে নারীরা চাকরি করছে। সবচেয়ে শক্তিশালী দেশেও নারী সরকারপ্রধান নাই। সেখানে নারীরা নির্বাচনে দাঁড়ালে হেরে যায়।

সরকারপ্রধান বলেন, মেয়েদের বিচরণ সব জায়গায়। বাংলাদেশে সবক্ষেত্রে এখন নারীরা দায়িত্ব পালন করছে। এমনকি বিজিবিতে নারী আছে। সরকারপ্রধান বলেন, এখন পরীক্ষায় মেয়েরা ভালো রেজাল্ট করছে। মেয়েরা এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখানে যেন কোনো জেন্ডার সমস্যা (নারী-পুরুষে বৈষম্য) না হয়। জেন্ডার সমস্যা নিয়েও ভাবতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। এখানে সবার অংশগ্রহণে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। সবার জন্য জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তির ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।

নারীর সুরক্ষায় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সবার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সারা বাংলাদেশে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। সেখানে মেয়েরাই বেশি উপকৃত হচ্ছে। ভূমিহীন গৃহীনদের ২ কাঠা জমির ওপরে ঘর করে দিচ্ছি। এই ঘরের মালিকানা কিন্তু নারী-পুরুষ সবাই। তবে ঘর পেয়ে যদি কেউ নতুন বউ আনতে চায় সেটা কিন্তু চলবে না। সে ক্ষেত্রে মেয়েরা ঘর পেয়ে যাবে। ‘৮৪ লাখ মানুষ গৃহহীন ভূমিহীন প্রকল্পের সেবা পেয়েছে। ৮ লাখ পরিবার ঘর পেয়েছে। এছাড়া আদর্শ গ্রাম ও ঘূর্ণিঝড়ে যাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরও পুনর্বাসন করা হয়েছে। যারা বস্তিবাসী তাদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। যে সকল রিকশাচালক, ভ্যান চালকসহ অন্যরা বস্তিতে থাকে তারাও ফ্ল্যাটে থাকবে। পর্যায়ক্রমের সব বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে। এইসব ক্ষেত্রে মেয়েরাই সবচাইতে বেশি উপকারভোগী হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, যারা তৃতীয় লিঙ্গের আছে তাদের জন্য পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদেরকে আমরা স্বীকৃতির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সাংবিধানেও সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে। কোনো পরিবারে একটি সন্তান যদি তৃতীয় লিঙ্গ হয়ে জন্ম হয়, সেক্ষেত্রে সে যদি মেয়ে হয়ে নিজেকে প্রকাশ করে বা ছেলে হয়ে প্রকাশ করে, একজন ছেলে যে সম্পদ পাবে একজন মেয়েও সেই সম্পদের সম অধিকার পাবে।

ইসলাম ধর্ম সবাই সমান অধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্মের নাম করে আমাদের মেয়েদেরকে পর্দার আড়ালে রাখার চেষ্টা। সৌদি আরবে ওআইসি সম্মেলনে গিয়ে আমি দেখেছি সেখানে তাদের মেয়েদের বিভিন্ন কর্মস্থলে যারা আছে তাদের ছবি প্রদর্শন করে পরিচয় করে দেয়া হয়েছে। সৌদি আরবেও নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করা হচ্ছে। তাদেরকে আর পর্দার আড়ালে বন্দি করে রাখা হচ্ছে না। কর্মক্ষেত্রে তাদেরও সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। মেয়েদের অধিকার নিশ্চিতে সৌদি আরব এগিয়ে আছে। এখন আর কেউ মেয়েদের পর্দার আড়ালে দিতে পারবে না।

Share this content:

Related Articles

Back to top button