জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত সম্ভব: প্রধানমন্ত্রী

এবিএনএ : দেশের চিকিৎসকদের মেধাবী আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

একই সঙ্গে দেশেই বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

বুধবার রাজধানীর চাঁনখারপুলে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের’ নির্মাণকাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “বহুলোক বিদেশে চলে যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। যারা বড়লোক তারা বিদেশে যাবে তাতে আমার আপত্তি নাই।

“কিন্তু সমমানের চিকিৎসা আমাদের দেশের ডাক্তাররা দিতে পারবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ আমার দেশের ডাক্তাররা যথেষ্ট মেধাবী। তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। উন্নত ব্যবস্থা করতে হবে।”

‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণা, শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্লাস্টিক সার্জারি সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে’ পরিণত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিশ্বমানের এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য থাকবে ৫০০ শয্যার হাসপাতালে। চাঁনখারপুলে ১ দশমিক ৭৬ একর জমিতে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা।

২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করা যাবে বলে আশা করছে সরকার।

দক্ষ লোকবল সৃষ্টিতে নতুন এই ইনস্টিটিউট কাজ করবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতেও দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হাজার হাজার রোগীর ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “২০১৪ সালে বিএনপি জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়। নির্বাচন ঠেকানোর কথা বলে মানুষকে পুড়িয়ে মারার মিশন শুরু হয়। আর তাদের ক্যাডার বাহিনী সারা দেশে মানুষকে পুড়িয়ে মারা শুরু করে।

“১৩ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত তারা তাণ্ডব চালিয়েছে। কেউই তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি।তারা কিভাবে আশা করে যে, জনগণকে পুড়িয়ে মেরে আবার ক্ষমতায় যাবে।”

চিকিৎসার্ধীদের নিরাপত্তায় নিশ্চিত করতে ঊপনিবেশিক আমলে নির্মিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভবন ভেঙে ফেলার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ঢাকা মেডিকেল কলেজের যে পুরোনো বিল্ডিংগুলো আছে .. আমরা হেরিটেজ হেরিটেজ বলে এই পুরনো বিল্ডিংগুলো ব্যবহার করতে যেয়ে কখন যে মাথার ওপর ভেঙে পড়ে, মানুষ মারা যাবে তার কোনো ঠিক নাই।”

ঐহিত্যবাহী দালানগুলোর কিছু অংশ সংস্কার করার তাগিদ দিয়ে তিনি আরও বলেন, “কিছুটা হ্যারিটেজ রক্ষার জন্য যেটুকু দরকার, সেটুকু রাখা যাবে। এর বাইরে বিল্ডিংগুলো সম্পূর্ণ ভেঙে অত্যন্ত আধুনিক এবং উন্নত যুগোপোযুগী প্রযুক্তি সম্পন্ন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করতে চাই।”

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের এই অংশের জন্য সমালোচিত হবেন এমন আভাস দিয়ে বলেন, “আমি জানি, আমি কিছু করতে গেলে এক গ্রুপ আছে লাফ দিয়ে পড়ে..হেরিটেজ রক্ষা। জীবন বড়, না হেরিটেজ বড়। চিকিসা সেবা বড়, না হেরিটেজ বড়।

“শত বছরের বিল্ডিং ধসে যে মানুষ মারা যাবে, তখন তো ওই হেরিটেজওয়ালারা দায়িত্ব নেবে না। তখন দোষ পড়বে সরকারের ওপর।”

তিনি বলেন, “এখনই শুনবেন টকশো শুরু হয়ে গেল। লেখালেখি শুরু হয়ে গেল। সেটা হতে পারে। কিন্তু দেশের মানুষের জন্য যেটা করা দরকার সেটা আমি করব।”

স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button