অর্থ বাণিজ্যলিড নিউজ

তিন স্তরের ভ্যাট ও সর্বোচ্চ হার ৫% চান নারী উদ্যোক্তারা

এবিএনএ: নতুন আইনে তিন স্তরে ভ্যাট, ভ্যাটের সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশ, শুল্কমুক্ত সুবিধায় যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আমদানি এবং বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুযোগসহ আগামী বাজেটে ৮ দফা দাবির বাস্তবায়ন চায় নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার্স নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ওয়েন্ড)। শনিবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ড. নাদিয়া বিনতে আমিন।

নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশে ওয়েন্ডের দাবিগুলো হলো-
১. সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, ২. ভ্যাটের হার হ্রাস, ৩. করহার হ্রাস, ৪. শুল্কহার হ্রাস, ৫. ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, ৬. প্রতি বিভাগে সাপোর্ট সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা, ৭. আন্তঃজেলা ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মেলায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহায়ক নীতি প্রণয়ন, ৮. বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন (বেজা), ইপিজেডে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে শিল্প স্থাপনে প্লটসহ সুযোগ সৃষ্টি।

সংবাদ সম্মেলনে ড. নাদিয়া বিনতে আমিন নতুন ভ্যাট আইনে তিনটি স্তরে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ হার নির্ধারণের সুপারিশ করেন। আয়করের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য বর্তমানে প্রচলিত করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখের পরিবর্তে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার দাবি জানান তিনি। এছাড়া, নারী উদ্যোক্তাদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ আমদানি এবং বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। দেশে করপোরেট করহার এশিয়া কিংবা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি। করপোরেট করহার সব পর্যায় থেকে আগামী তিন অর্থবছরে পর্যায়ক্রমে ৫, ৭ ও ১০ শতাংশ হার করার দাবি করা হয়। নারী উদ্যোক্তা দ্বারা পরিচালিত বছরে ৫০ লাখ টাকা টার্নওভার রয়েছে, এমন প্রতিষ্ঠানের শূন্য হারে ভ্যাট অব্যাহতির দাবি জানিয়ে ড. নাদিয়া বিনতে আমিন বলেন, দেশের নারী উদ্যোক্তাদের সিংহভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি মানের। ফলে উচ্চ হারে ভ্যাট আরোপ করা হলে তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে পারবেন না।

তিনি বলেন, মাস্টারকার্ড ইনডেক্স অব উইমেন এন্টারপ্রিনিয়ার্সের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ব্যবসা মালিকদের মধ্যে নারী ৩১.৬ শতাংশ। অর্থনীতিতে নারীদের এত অবদান থাকার পরও নারী উদ্যোক্তারা কাঙ্ক্ষিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া এসডিজি বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নেই। আরো ১১টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের সাথে নারীরা জড়িত। সুতরাং নারীদের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা ও স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সরকার সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করলেও নারী উদ্যোক্তারা এই সুবিধা পাচ্ছেন না। ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা নানাবিধ শর্তের বেড়াজাল ও উচ্চ সুদের কারণে প্রতিনিয়ত পুঁজি সংগ্রহে হিমশিম খাচ্ছে। এ বিষয়ে বিদ্যমান নীতিমালা আরো সহজ করে তা কার্যকর করতে হবে।

ওয়েন্ডের প্রেসিডেন্ট বলেন, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের লক্ষ্যে নারীদের জন্য বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পেশাগত ও কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির করতে একটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একই সাথে দেশের আটটি বিভাগে নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান ও ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি বিভাগে একটি করে সাপোর্ট সেন্টার করতে হবে।

দেশ-বিদেশে মেলায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, বিসিক শিল্প নগরী, আইটি পার্ক ইত্যাদিতে নারী উদ্যাক্তাদের বিশেষ সুবিধায় প্লট বরাদ্দ করার দাবি জানান নাদিয়া বিনতে আমিন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীমা লাইজু ও সহসভাপতি আয়শা সিদ্দিকা, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারা সিদ্দিকা, সাধারণ সম্পাদক জিসান আক্তার চৌধুরীসহ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button