অর্থ বাণিজ্য

তিন ধাপে কমছে তেলের দাম

এবিএনএ : অবশেষে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে ফার্নেস অয়েলের দাম কমানো হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় অকটেন, কেরোসিন, ডিজেল ও পেট্রোলের দাম কমছে। সব ধরনের তেলের প্রতি লিটারের দাম গড়ে সাড়ে ১১ টাকা এবং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ সাড়ে ১৩ টাকা কমানোর সুপারিশ করেছে অর্থমন্ত্রণালয়।

তিন ধাপে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে বলে আজ সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এরআগে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের চাহিদা অনুযায়ী অর্থমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ সুপারিশ তৈরি করে তা অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রীর সাড়া পেয়েই তেলে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ডিজেলের প্রতি লিটার সর্বোচ্চ দাম কমছে ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রি হয় ৬৮ টাকায়। এতে সরকারের লাভ হয় ২৩ টাকা ৩২ পয়সা। প্রতি লিটার ডিজেলের দাম কমিয়ে ৫৪ টাকা ৪০ পয়সা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সরকারের লাভ হবে ৯ টাকা ৭২ পয়সা।

প্রতি লিটার অকটেনে দাম কমছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা। বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা ৮৯ টাকা ১০ পয়সা বিক্রি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি-মার্চ সময়ে প্রতি লিটার অকটেনে সরকারের লাভ হয়েছে ৩৭ টাকা । দাম সমন্বয়ের পর প্রতি লিটারে লাভ হবে ২৭ টাকা ১১ পয়সা।

প্রতি লিটার কেরোসিন দাম কমছে ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমানে প্রতি লিটার কোরোসিন বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা। এতে সরকারের লাভ হয় ২২ টাকা ৭১ পয়সা। কেরোসিনের দাম কমিয়ে ৫৪ টাকা ৪০ পয়সা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সরকারের লাভ হবে ৯ টাকা ১১ পয়সা।

প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম কমছে ৯ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমানে প্রতি লিটার পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ৯৬ টাকায়। এতে সরকারের লাভ হয় ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা। প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা ৪০ পয়সা বিক্রির সুপারিশ করা হয়েছে। এতে সরকারের লাভ হবে ২৩ টাকা ৯০ পয়সা।

ফার্নেস অয়েলের দাম ইতিমধ্যে কমানো হয়েছে। দাম কমানোর আগে প্রতি লিটার বিক্রি হতো ৬০ টাকা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা। দাম কমানোর আগে প্রতি লিটারে লাভ হতো ২৬ টাকা ২৩ পয়সা। দাম কমানোর পর লাভ হচ্ছে ১৪ টাকা ২৩ পয়সা।

আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করার দাবি অনেক দিনের। কিন্তু বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এর পুঞ্জিভূত লোকসান ও বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল অংকের ঋণ পরিশোধের অজুহাতে জ্বালানি তেলের দাম আর সমন্বয় করা হয়নি। ইতিমধ্যে বিপিসি তাদের ঋণ পরিশোধ করার পর বর্তমানে লাভজনক অবস্থানে আছে। এ অবস্থায় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কথা চিন্তা করে বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

অর্থসচিবের সুপারিশে বলা হয়েছে, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দরপতনের ফলে অকটেন এবং পেট্রোল বিক্রয়ে বিপিসি’র লাভ হচ্ছে ৩৭ টাকা ১ পয়সা ও ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা। এ দুটি জ্বালানি সমাজের উচ্চবিত্তরা ব্যবহার করলেও লাভ বিবেচনায় ১০ শতাংশ কমানো যৌক্তিক হবে প্রতীয়মান হয়। এতে করে অকটেনের দাম দাঁড়ায় ৮০ টাকা ১০ পয়সা এবং পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা ৪০ পয়সা। দেশে বর্তমানে ক্রমবর্ধমান সিএনজি চালিত যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে এবং পরিবেশের উপর এর বিরূপ প্রভাব বিবেচনায় এ দুটি জ্বালানির দাম বর্ণিত হারে কমানো যেতে পারে। দাম কমানোর পরও এ দুটি জ্বালানি বিক্রয়ে লাভ হবে লিটার প্রতি প্রায় ২৭ টাকা ১১ পয়সা এবং ২৩ টাকা ৯০ পয়সা।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button