আইন ও আদালতবাংলাদেশরাজনীতিলিড নিউজ

অনৈতিক কাজে জড়িত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা নেত্রী পাপিয়ার বাড়িতে র‌্যাবের অভিযান

এবিএনএ : অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) কর্তৃক গ্রেফতার হওয়া নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারন সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার নিজ বাড়ি ও শ^শুড়ালয়ে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব।রবিবার সকালে র‌্যাব-১ এর একটি তদন্ত টিম শহরের ভাগদীস্থ পাপিয়ার পিত্রালয় ও পশ্চিম ব্রাহ্মন্দীস্থ শ^শুড়ালয়ে অভিযান চালায়। শনিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নয়াদিল্লী যাওয়ার সময় পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী, সুমন @ মতি সুমন (৩৮) ও তার ব্যক্তিগত সহকারী সাব্বির (৩০) কে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিন থেকে পাপিয়া (২৮) ও তার ব্যক্তিগত সহকারী তাইয়্যেবা (২২)-কে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের নিকট থেকে ০৭টি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬শ’ জাল টাকা ও ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শাফিউল¬াহ বুলবুল জানান, আটক পাপিয়ার রাজধানীর তেজগাঁও এফডিসি গেট সংলগ্ন এলাকায় অংশীদারিত্বে তার একটি কার এক্সচেঞ্জ নামক গাড়ির শো-রুম এবং নরসিংদীতে কে.এম.সি কার ওয়াশ এন্ড অটো সলিউশন নামে একটি গাড়ি সার্ভিসিং সেন্টার রয়েছে। এসব ব্যবসার আড়ালে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী, সুমন @ মতি সুমন অস্ত্র, নারী, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন। এছাড়া এলাকার অসহায় তরুনীদের আর্থিক সহায়তার নামে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করেছেন। এতে স্বল্প সময়ের মধ্যে পাপিয়া ও তার স্বামী মতি সুমন বিলাসবহুল বাড়ি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন। র‌্যাব আরো জানায়, রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিন এর ১১তলায় প্রেসিডেন্ট কক্ষটি পাপিয়া ভাড়া নিয়ে ৩ মাসে হোটেল কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করেছেন ৮৮ লাখ টাকা।

হোটেলের ১৯ তলার পুরোটা বুক করে নিতেন পাপিয়া। আর প্রতিদিন আড়াই লাখ মদের বিল পরিশোধ করতেন তিনি। সবমিলিয়ে গত ৩ মাসে পাপিয়া ৩ কোটি টাকা বিল পরিশোধ করেছেন হোটেল কর্তৃপক্ষকে। র‌্যাব আরো জানায়, হোটেলে যারা আসতেন তাদের কক্ষে পাঠিয়ে দেয়া হতো তরুনীদেরকে। এরপর অশ্ল¬ীল ভিডিও ধারণ করে তাদেরকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো পাপিয়া। লোকলজ্জার ভয়ে কেউ মুখ খুলতো না। আর এসব অনৈতিক কাজে যেসব তরুনীদের ব্যবহার করা হতো তাদেরকে প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে দেয়া হতো। আর কেউ রাজি না হলে তাদেরকে লাঠি দিয়ে পেটাতেন পাপিয়া। আর নরসিংদীতে ক্যাডার বাহিনী দিয়ে চাঁদাবাজি এবং তার স্বামীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা চালাতো।

স্বল্প সময়ের মধ্যে পাপিয়া ও তার স্বামী নরসিংদী ও ঢাকায় একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাটসহ বিপুল অংকের টাকার মালিক হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দী এলাকার বাসিন্দা জানান, জিরো থেকে হিরো হয়ে গেছে পাপিয়া ও তার শ^শুড় বাড়ির লোকজন। পাপিয়ার শ^শুড় মতিউর রহমান চৌধুরী একজন গানের শিক্ষক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে গান শেখাতেন তিনি। আর সেখান থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে সংসার চলতো তাদের। এখন তাদের বিলাসবহুল বাড়ি।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button