আমেরিকাএবিএনএ স্পেশাল

ট্রাম্প ঠেকাতে মুসলিম আমেরিকানদের মিলিয়ন ভোটার সংগ্রহ অভিযান

এ বি এন এ : মিলিয়ন ভোটার তালিকাভুক্তির লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন মুসলিম-আমেরিকানরা। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং ইতিমধ্যেই যারা নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদেরকে নজরদারিতে রাখার যে বিধি করবেন বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা। এ বিষয়ে ইউএস কাউন্সিল অব মুসলিম অর্গানাইজেশন’র বোর্ড মেম্বার ওসামা অবু ইরসাঈদ বলেছেন, ‘ভার্জিনিয়া ও ফ্লোরিডার মত ফলাফল নির্ধারণী রাজ্যসমূহে মুসলমান ভোটারেরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে আসছে নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে ধরাশায়ী করা খুব কঠিন হবে না। ভোটের ময়দানে মুসলিম বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের জবাব ব্যালটেই প্রদানের আহ্বান জানান তিনি। উল্লেখ্য, আমেরিকান মুসলমানদের অধিকার ও মর্যাদা সুরক্ষায় কর্মরত জাতীয় ও আঞ্চলিক সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে এই মোর্চা গঠিত হয়েছে এবং তারাই মিলিয়ন তথা ১০ লক্ষাধিক ভোটার তালিকাভুক্তির জন্য কাজ শুরু করেছেন। এদিকে, কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স তথা কেয়ার এর পক্ষ থেকে সর্বশেষ পরিচালিত এক জরিপে উদঘাটিত হয়েছে যে, ১১ শতাংশ মুসলমানই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা কত তা সুনির্দিষ্টভাবে এখনও জানা না গেলেও প্রায় ৯০ লাখ রয়েছেন মুসলমান। এর মধ্যে অনেকেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেও ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হননি কিংবা ভোট প্রদানের ব্যাপারে আগ্রহী নন। এমন মিলিয়ন ভোটারের সন্ধান করছে ওই কাউন্সিল। নিউইয়র্কেও চলছে এ অভিযান। মসজিদের ইমাম এবং কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্টরা নেতৃত্ব নিয়েছেন এ অভিযানে। কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ওসামা আবু ইরসাঈদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা মুসলিম সম্প্রদায়কে সজাগ করতে চাই যে, আপনি যদি আপনার অধিকার স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতে চান, তাহলে কেউই এগিয়ে আসবে না সে অধিকার ফিরিয়ে দিতে। এবং তেমন ধরনের কিছু হিংসাত্মক মানুষ রয়েছে এই যুক্তরাষ্ট্রে, যারা মুসলমানদের অধিকার-মর্যাদা ছিনিয়ে নিতে চায়। তাই, সংবিধান প্রদত্ত অধিকার সুরক্ষায় আমাদের সোচ্চার হওয়া দরকার’। কেয়ারের নির্বাহী পরিচালক নিহাদ আওয়াদ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম আতঙ্ক তৈরির যে ভয়ঙ্কর একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা রুখতে মিলিয়ন ভোটার সংগ্রহের এ অভিযানের গুরুত্ব অপরিসীম।’ এ যাবৎ ৩ লক্ষাধিক মুসলমান-আমেরিকান এতে স্বাক্ষর করেছেন বলে ২৩ জুলাই প্রাপ্ত সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে। এদিকে, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের জবাবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২১ জুলাই বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘মুসলমানরা সব সময়ই আমেরিকার একটি অংশ। তাদের মধ্যে গুটিকয়েক সহিংসতার সাথে যুক্ত থাকলেও ঢালাওভাবে সবাইকে দোষী ভাবা উচিত নয়।’ ঈদুল ফিতর উপলক্ষে হোয়াইট হাউজে ওবামার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক ডিনার পার্টিতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনাও করেন। ওবামা বলেন, ‘অন্য আমেরিকানদের মত মুসলমানেরাও সন্ত্রাসবাদের হুমকিতে ভীত। আর এমনি অবস্থায় যারা সহিংস ঘটনা ঘটায় তারা পুরো মুসলিম-আমেরিকান সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না।’ যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার যে বক্তব্য ট্রাম্প দিয়েছেন তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবামা বলেন, ‘ইসলামিক স্টেটের অপকর্মের জন্য মুসলমানদের ওপর দোষ চাপিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব যদি ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে সেটি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় ভালো কোন সিদ্ধান্ত হবে না। আইএস এবং আল কায়েদা তো পবিত্র রমজানে মুসলমানদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করেছে।’ ওবামা উল্লেখ করেন, ‘আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ মানায় না। এছাড়া, এই মূল্যবোধের জন্যই তো আমেরিকা মহান জাতিতে পরিণত হয়েছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button