আমেরিকা

ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার নতুন আদেশ মামলা আরো পাঁচ রাজ্যে

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছয়টি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দ্বিতীয় দফায় যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি রাজ্যে মামলা হয়েছে। নতুন ওই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে হাওয়াই রাজ্যে মামলার এক দিন পরই ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক, ম্যাসাচুসেটস ও ওরেগনে রাজ্যে মামলা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম দফা নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে যে আইনি লড়াই হয়েছিল তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিল ওয়াশিংটন এবং ওই মামলায় জয়ও পেয়েছিল তারা। একজন ফেডারেল বিচারকের নির্দেশে ওই নির্বাহী আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যায়। আর এখন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ-সংক্রান্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় নির্বাহী আদেশ কতটা যুক্তিসম্পন্ন তাও চ্যালেঞ্জ করলেন ওয়াশিংটনের ওই আদালতটি। রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল বব ফার্গুসন বিচারকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন এই আদেশটিও স্থগিত করা হয়। ফার্গুসনের মতে, ‘এটিও সংবিধানপরিপন্থী নির্বাহী আদেশ। ট্রাম্পের উদ্দেশে আমার বার্তা হলো, এত তাড়াহুড়া করবেন না। এক মাস ধরে একটি ব্যর্থ হয়ে যাওয়া নির্দেশ মেরামত করে আবার সেই পথেই ছুটছেন তিনি। নতুন আদেশেও আগের ত্রুটিগুলো রয়েই গেছে। আইনগতভাবে এর উদ্দেশ্যও আগেরটির মতোই। ’

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি হচ্ছে, আমেরিকাকে সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে নিরাপদ রাখার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। আর মার্কিন অনেক নাগরিকও ট্রাম্পের এই আদেশের পক্ষে নিজেদের মতামত দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের একজনের মত, ‘দেশের জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো করা দরকার, আর প্রত্যেকের নিরাপত্তার জন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ’

আরেক নাগরিক মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বলছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে গত প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে যে পরিস্থিতি চলছে তার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। যে ধরনের ব্যবস্থা আগে কখনো নেওয়া হয়নি। ’ আর নিরাপত্তার কারণে ট্রাম্পের এই নতুন নিষেধাজ্ঞা সময়োপযোগী বলেই মনে করছেন এই ব্যক্তি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম নির্বাহী আদেশে সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, দ্বিতীয় দফার আদেশে ইরাককে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি ছয়টি দেশ হলো ইরান, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুদান, লিবিয়া ও  সোমালিয়া।

এ ছাড়া নতুন আদেশে বলা হচ্ছে, সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী কর্মসূচি বন্ধ রাখা হবে। নতুন আদেশে শরণার্থীদের ক্ষেত্রে ১২০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এই নতুন নিষেধাজ্ঞাও আইনি বাধার মুখে পড়ছে। প্রথমেই নতুন আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাওয়াই অঙ্গরাজ্য। এরপর নিউ ইয়র্ক এই আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করে বলেছে, এটি আসলে মুসলিমদের ওপরই নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে ওয়াশিংটন বলছে, এ ধরনের আদেশ রাজ্যের জন্য ক্ষতিকর। এরপর ম্যাসাচুসেটস, মিনেসোটা ও ওরেগন অঙ্গরাজ্যও নতুন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা করে এটি স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ট্রাম্পের জারি করা নতুন এই আদেশটি আগামী ১৬ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

Share this content:

Back to top button