আমেরিকালিড নিউজ

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিএনএন

এবিএনএ: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সে দেশের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএন)। গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে জড়ানোর পর সিএনএন এর প্রধান হোয়াইট হাউজ সংবাদদাতা জিম অ্যাকোস্টার হোয়াইট হাউজে প্রবেশে মার্কিন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা এবং তার প্রেস পাস বাতিল করা হয়। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে এ মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছে সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট।
মামলার বাদী হয়েছে সিএনএন এবং অ্যাকোস্টা। আর বিবাদী করা হয়েছে ছয়জনকে। এরা হলেন- প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চিফ অব স্টাফ জন এফ কেলি, প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স, হোয়াইট হাউজের যোগাযোগ বিষয়ক উপ-প্রধান বিল শাইন, গোয়েন্দা পরিচালক র‌্যানডলফ অ্যালেস ও অপর এক কর্মকর্তা যিনি অ্যাকোস্টার ‘হার্ড পাস’ জব্দ করে নিয়ে যান।
সিএনএন এক বিবৃতিতে বলেছে, অ্যাকোস্টার প্রেস পাস ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প সিএনএন এবং সাংবাদিক অ্যাকোস্টার সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছেন।
গত ৭নভেম্বর সাংবাদিক অ্যাকোস্টার হোয়াইট হাউজে প্রবেশের প্রেস পাস বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। যা সিক্রেট সার্ভিস ‘হার্ড পাস’ নামে পরিচিত।
ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নত্তোর পর্বে সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল ঠেকানোর ইস্যু থেকে শুরু করে অভিবাসন বিরোধী বিজ্ঞাপন প্রচার এমনকি ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়টি নিয়েও ট্রাম্পকে নানা রকম প্রশ্ন করে যাচ্ছিলেন অ্যাকোস্টা।
তার প্রশ্নবানে বিব্রত ট্রাম্প এক পর্যায়ে বলে ওঠেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। এবার মাইক্রোফোন রাখুন।’ তার এ কথার পরই হোয়াইট হাউজের এক নারী কর্মী এগিয়ে এসে অ্যাকোস্টার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অ্যাকোস্টা তাকে বাধা দেন।
ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে সম্মেলনকক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে একটু পরই ফিরে এসে অ্যাকোস্টাকে ‘অত্যন্ত রূঢ়’ ও ‘ভয়ঙ্কর’ বলে মন্তব্য করেন। ওই নারী কর্মীর সঙ্গে অ্যাকোস্টার আচরণকেও ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
হোয়াইট হাউজ একজন সাংবাদিকের এ ধরনের আচরণ কখনো সহ্য করবে না। আর এ কারণেই তার প্রেস পাস বাতিল করা হয়েছে বলে জানান হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স।
তবে অ্যাকোস্টাকে সমর্থন করে কথা বলেন অন্য আরেক সাংবাদিক। তিনি অ্যাকোস্টাকে ‘অত্যন্ত পরিশ্রমী একজন প্রতিবেদক’ বলে মন্তব্য করেন। সিএনএন বলেছে, অ্যাকোস্টা চ্যালেঞ্জিং সব প্রশ্ন করার কারণেই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
অ্যাকোস্টার পক্ষ সমর্থন করেছে হোয়াইট হাউজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও। তারা বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে যা ঘটেছে তার জন্য অ্যাকোস্টার হোয়াইট হাউজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করাকে বাড়াবাড়ি আখ্যা দিয়েছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সিএনএন এর মামলাকেও জোর সমর্থন দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
সিএনএন এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব অ্যাকোস্টা যাতে সঠিক উপায়ে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসতে পারেন, প্রাথমিকভাবে তারা সেই চেষ্টা করছেন। হোয়াইট হাউজ থেকে অ্যাকোস্টার কার্ড প্রত্যাহারের বিষয়ে আদালতের রায় চাওয়া হয়েছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button