আমেরিকা

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনে মুসলিমদের বিক্ষোভ

এবিএনএ : যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের নিষিদ্ধ করার নির্বাহী আদেশে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষর করার আগে কয়েক হাজার মুসলিম জরুরি ভিত্তিতে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। ওয়াশিংটনের স্কয়ার পার্কে তারা সমবেত হয়ে বিরল এক বিক্ষোভের আয়োজন করেন। এ সময় তাদের হাতে ‘কোনো মানুষই অবৈধ নয়’ লেখা ব্যানার দেখা যায়। আরও ব্যানারে লেখা ‘আমরা যত মুসলিমকে জানি তারা ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে উত্তম আমেরিকান’। এ সময় বিক্ষোভকারীদের মাথার ওপর কমপক্ষে ৫টি হেলিকপ্টার চক্কর দিতে থাকে। শত শত মোবাইল ফোনের আলো জ্বলে ওঠে। তাতে ওই পার্কের বিপরীত প্রন্তে সৃষ্টি করা হয় একটি ‘হোয়াইট ওয়াল’ বা সাদা দেয়াল। এ সময় তারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘নো ব্যানস, নো ওয়ালস, দিস ইজ আওয়ার নিউ ইয়র্ক!’ অর্থাৎ কোনো নিষেধাজ্ঞা নয়। কোনো দেয়াল নয়। এটা হলো আমাদের নিউ ইয়র্ক। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেয়া সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করছেন এমন খবরে স্বল্প সময়ের নোটিশে এ বিক্ষোভের ডাক দেয় কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (সিএআইআর বা কেয়ার)। কেয়ারের জাতীয় নির্বাহী পরিচালক নিহাদ আওয়াদ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ হবে মুসলিম বিরোধী একটি নির্দেশ। এতে সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি এ আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে তা হবে আমেরিকার নীতি বিরোধী। তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞায় আমেরিকা নিরাপদ হবে না। এতে মুসলিম শরণার্থী ও আমেরিকার পুরো মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ বাড়বে। উল্লেখ্য, ফেডারেল অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তাদের নির্দেশের সঙ্গে সহযোগিতা না করার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শহর। তার মধ্যে নিউ ইয়র্ক অন্যতম। উল্টো তারা সবাই মিলেমিশে একটি সুন্দর শহর অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ শহরকে নিভৃত আবাসস্থল হিসেবে অব্যাহত রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের যে তহবিল পায় তা বাতিল করার কথা বলেছেন। তিনি যদি এটা করেন তাহলে তাতে হাজার হাজার অভিবাসী পরিবার ঝুঁকিতে পড়বে। নিউ ইয়র্ক সিটির শতকরা ৪০ ভাগ মানুষই বিদেশে জন্মগ্রহণকারী। সিটি কন্ট্রোলার স্কট স্ট্রিঙ্গারের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার এ খাতে ৭০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দেয়। সেই অর্থের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এ সিটি। তাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই অর্থ কর্তন করলে এসব মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই বরাদ্দ দিয়ে পুলিশের সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকাণ্ড, সমাজ কল্যাণমুলক কাজ যেমন শিশু সুরক্ষা, গৃহায়ণ ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে ব্যবহার করা হয়। স্কট স্ট্রিঙ্গার আরও বলেন, আমি আরও পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, আমি একজন ইহুদি আমেরিকান। তবে আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়াবো। কারণ, আজ এবং অন্য প্রতিটি দিনের জন্য আমরা সবাই এক মানব সন্তান। আমরা সবাই মিলেমিশে এক হয়ে বসবাস করি।

Share this content:

Back to top button