,
প্রচ্ছদ | জাতীয় | আন্তর্জাতিক | অর্থনীতি | আমেরিকা | লাইফ স্টাইল | ভিডিও নিউজ | ফিচার | আমেরিকা | বিনোদন | রাজনীতি | খেলাধুলা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | শিক্ষা

গ্রামের বন্ধ হওয়া খেলাধুলা সচল করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ঘরের বাইরে মাঠে শিশুদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গ্রামাঞ্চলের বন্ধ হওয়া খেলাধুলা সচল করতে হবে। এ ধরনের খেলাধুলা শিশুদের যেকোন ধরনের ভুল পথে যাওয়া বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে সহায়ক হবে। কারণ, জাতি গঠনে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার সকালে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে গৌরবোজ্জল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮৫ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও সংগঠককে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ ‘২০১৩-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বেশিরভাগ শিশু প্রায় সময় ফ্ল্যাটে মোবাইল, ল্যাপটপ এবং আইপ্যাড নিয়ে সময় কাটাচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই অমঙ্গলজনক।’

প্রধানমন্ত্রী শিশুদেরকে কিছু সময়ের জন্য হলেও ঘরের বাইরে গিয়ে মাঠে খেলাধুলা করা এবং দৌড়ঝাঁপ দেওয়ার সুযোগ দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান। এতে শিশুদের সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি সকল অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, আপনারা আপনাদের শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও মনোযোগী হবেন। তাহলে শিশুরা আর ভুল পথে যাবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলা শরীরচর্চা এবং সাংস্কৃতিকচর্চা একটি জাতির জন্য অপরিহার্য। এ কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে আমাদের একেবারে ছোট শিশু থেকে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তাহলেই আমাদের ছেলে-মেয়েরা মানুষের মতো মানুষ হতে পারবে। তাদের মনটাও ভালো থাকবে, তারা ভালোভাবে লেখাপড়া শিখবে এবং বিপথে যাবে না- এটাই আমার বিশ্বাস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলাধুলা এক ধরনের শরীর চর্চা। এতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শারীরিক এবং মানসিকভাবেও যথেষ্ট উপকৃত হয়। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে অনেক ধরনের খেলাধুলা ছিল, সেগুলো আবার সচল করতে হবে। এ জন্য আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা, আন্তঃকলেজ প্রতিযোগিতা এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতাগুলো যেন ব্যাপকভাবে চলে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, সাঁতার, হকিসহ বিভিন্ন খেলার সাথে সাথে দেশিয় খেলাগুলো যেমন: ডাংগুলি, সাত চারা গোল্লাছুট থেকে শুরু করে হাডুডুসহ যে সব খেলাগুলো প্রচলিত ছিল, সেগুলো আবার চালু করতে হবে। আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে হবে। যেটা আমরা ফুটবলের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায় থেকেই আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা শুরু করেছি। ফলে আমাদের অনেক নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে এবং তারা জাতীয় পর্যায়েও বিশেষ অবদান রাখছে। কাজেই এদিকে সকলে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন।

এ ব্যাপারে যে ধরনের সহযোগিতা দরকার তার সরকার তা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই এ খেলাধুলার বিষয়ে আমাদের আরো উদ্যোগী হতে হবে।

রাজধানী ঢাকায় খেলাধুলার জায়গা কম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কিছুটা উদ্যোগ নিয়েছি প্রত্যেক এলাকাতেই যেন খেলার মাঠ থাকে। যেখানে খালি জায়গা পাচ্ছি খেলার মাঠ করে দিচ্ছি। কারণ, প্রত্যেকটা এলাকাতেই খেলার মাঠ থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সংসদ ভবনের পাশে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের খেলাধুলার জন্য একটা একাডেমিও নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।

১৯৯৬ সালে তিনি প্রথম সরকার গঠনের পর বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের অলিম্পিকে আমেরিকা থেকে ৭২টি পদক জয় করে আনার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী তাদের আরো পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে খেলাধুলার উন্নয়নের ওপর একটি প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গনে তাদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮৫ জন ক্রীড়া ব্যক্তি ও সংগঠককে এই মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে পাবেন একটি আঠারো ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক, এক লাখ টাকার চেক এবং একটি সনদপত্র।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র শহীদ লে. শেখ জামালকে ২০২০ সালের খেলোয়াড় ও সংগঠক হিসেবে (মরণোত্তর) পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তাঁর পক্ষে পরিবারের সদস্য এবং খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল পুরস্কার গ্রহণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অটিস্টিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময়ে স্পেশাল আলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে ২১৬টি স্বর্ণ, ১০৯টি রৌপ্য ও ৮৪টি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করে দেশের জন্য সম্মান বযে এনেছে। এ বছরের মার্চে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু চার-জাতি শারিরীক প্রতিবন্ধী টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্ণামেন্টে বাংলাদেশ ভারতকে ৯ উইকেটে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

ক্রিকেট ফুটবলসহ সব ক্রীড়াক্ষেত্রেই আমাদের নারীদের সাফল্য উল্লেখ করে তিনি নারীদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল দেশের একজন চ্যাম্পিয়ন ক্রীড়াবিদ এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ ছিলেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

খেলাধুলার মানোন্নয়নে তাঁর সরকার প্রত্যেক উপজেলা পর্যায়ে যে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করে দিচ্ছে সে কাজ আরো দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও প্রধানমন্ত্রী এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেন।

তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার সুবিধাদির উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে দেশের ১২৫টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৮৬টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে দেশের অবশিষ্ট ১৭১টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ চলমান রয়েছে। তবে আমি মনে করি এ ব্যাপারে যাতে আর সময় না নেয়া হয় সেটা দেখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার পর্যটন জেলা কক্সবাজারের দৃষ্টি নন্দন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করে দিচ্ছে উল্লেখ করে, সিলেটেও আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে এবং দুটি জায়গাতেই পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য এবং সমুদ্রের পাশটি উন্মুক্ত রেখেই তা করা হচ্ছে।

পাশাপাশি তাঁর সরকার প্রতি জেলায় জেলায় যে স্টেডিয়াম করে দিচ্ছে তা যেন সারাবছর ব্যবহার হয়, সকল খেলার জন্য তা উন্মুক্ত করে দেয়ারও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন। সে সব জায়গায় যদি ক্রিকেট পিচ থাকে তাহলে সেগুলো যাতে সংরক্ষণ করা হয় সেদিকেও তিনি দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১৪৮টি এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ৬৮টি ক্রীড়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় এবং ‘মুজিববষর্’ উপলক্ষে বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন দেশের সর্ববৃহৎ ক্রীড়া উৎসব ‘বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমস-২০২০’ আয়োজন করায় তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানান ।

তিনি খেলাধুলার উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২০১৮ সাল থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট বালক অনূর্ধ্ব ১৭ এবং ২০১৯ সাল থেকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা অনূর্ধ্ব ১৭ আয়োজন করছে। এর মাধ্যমে দেশের ক্রীড়াঙ্গন অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় পাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় খেলোয়াড়দের উন্নত প্রশিক্ষণে ফুটবলের দেশ ব্্রাজিল এবং ইউরোপে প্রেরণেরও উল্লেখ করেন তিনি। এর বাইরেও ক্রীড়া ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনকারী ক্রীড়াবিদকে তাঁর সরকার তাৎক্ষণিক পৃষ্ঠপোষকতার উদ্যোগ নিচ্ছে।

খেলাধুলার উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ এবং সফলতার কথা তুলে ধরে টানা তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার পদাংক অনুসরণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ হতে ক্রীড়া ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ফলে ২০০৯ হতে ২০২১ সময়ে ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সফলতার পরিসংখ্যান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।

ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদান রাখা ক্রীড়াবিদদের জন্য জাতির পিতা ১৯৭৫ সালের ৬ আগষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ প্রস্তাব অনুমোদন করে যান উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এর পর আর সেটা সেভাবে কার্যকর না হলেও তাঁর সরকার ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন-২০১১’ প্রণয়নের মাধ্যমে সীডমানি দিয়ে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছে। এখানে সমাজের বিত্তশালীদেরকে দুঃস্থ এবং অসুস্থ খেলোয়াড়দের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। তিনি যতক্ষণ সরকারে রয়েছেন দুঃস্থ এবং অসুস্থ খেলেয়াড়দের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবেন। তবে এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানিক সহযোগিতার ব্যবস্থা তাঁর সরকার করতে চায়।

Chairman & Editor-in-Chief : Shaikh Saokat Ali
Managing Director: Akbar Hossain
Executive Editor: Mehedi Hasan
E-mail : abnanewsusa@gmail.com
Usa Office: 289 West Koach Avenue, Egg harbor City, New Jersey-08215, Bangladesh Office : 60/1. Purana Paltan (2nd Floor), Dhaka-1000, Usa. Phone: +16094649559, Cell:+8801711040113, +8801912-621573
Server mannarged BY PopularServer
Design & Developed BY PopularITLimited