লাইফ স্টাইললিড নিউজ

গরমে কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন

এবিএনএ: ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে রোগ-ব্যাধির ধরনও বদলায়। একেকটি ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার বেশ কিছু পরিবর্তন হয়। তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরীণ কিছু পরিবর্তন হয়। গরমে নতুন কিছু রোগ-ব্যাধির প্রাদুর্ভাব ঘটে। এসব রোগ-ব্যাধির কারণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে আগেভাগে জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

গরমে বা তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মানুষ প্রধানত দুইভাবে আক্রান্ত হয়। অতি তাপমাত্রাজনিত সমস্যা ও জীবাণু সংক্রমণজনিত রোগ। চার বছরের কম বয়সী শিশু, ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ, বেশি মোটা এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা অতি তাপজনিত সমস্যার ঝুঁকিতে থাকেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অধিক ঘামজনিত পানিস্বল্পতা, রক্তে লবণের মাত্রা কমে যাওয়া, অতি দুর্বলতা, হাত-পা কামড়ানো, মাথা ব্যথা, মাথা ঘুরানো ও বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া। এ ছাড়া অতি তাপে হিটস্ট্রোক বা খিঁচুনি থেকে অজ্ঞান হয়ে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিভিন্ন চর্মরোগ যেমন- ঘামাচি, চামড়ায় ফোস্কা পড়া, লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানির মতো সমস্যাও হতে পারে।

গরমে সর্দি, কাশি, ভাইরাল জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, হাম, বসন্ত, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, জন্ডিস, মেনিনজাইটিস, এনসেফালাইটিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্তের হার বেশি। কারও সর্দির সমস্যা থাকলে তা বেড়ে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। সাধারণ আমাশয় এবং রক্ত আমাশয় বেড়ে যেতে পারে। দূষিত পানি ও খাদ্য থেকে কলেরার মাত্রা অনেক বেশি হতে পারে। এসব রোগ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনে প্রচুর জীবাণুমুক্ত পানি পান করতে হবে। চিনিযুক্ত পানি, কোমল পানীয় ও অতি ঠাণ্ডা পানি বর্জন করতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে ঘাম বেড়ে গিয়ে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। অতি গরমে ছায়াযুক্ত স্থান অথবা ঘরের মধ্যে অবস্থান করুন। বেশি ঘেমে গেলে পানি দিয়ে শরীর মুছে ফেলুন অথবা গোসল করে ফ্যান ছেড়ে শরীর শুকিয়ে ফেলুন। হালকা ও সুতি জামা পরুন। রোদের মধ্যে পরিশ্রম না করে সকালে বা বিকেলে স্বল্প সময়ে কাজ সেরে ফেলুন। বেশি ঘাম হলে লবণযুক্ত শরবত পান করুন। এ ক্ষেত্রে খাবার স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে।

এ ছাড়া গরমের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের জন্য ফোটানো এবং বিশুদ্ধ পানি পান করুন। ফুটপাতের খোলা জায়গার খাবার খাবেন না। ধুলাবালিতে মাস্ক ব্যবহার করুন। সর্দি বা কাশির শুরুতেই ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। বসন্তে আক্রান্ত রোগীদের থেকে দূরে থাকুন। জ্বর হলে পর্যাপ্ত পানি বা স্যালাইন পানি গ্রহণ করুন। জ্বরের মাত্রা যদি বেশি হয় বা বমিসহ পেটব্যথা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত স্যালাইনের পানি পান করুন এবং তিন দিনে জ্বর না কমলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

লেখক: সাবেক ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button