আমেরিকা

হিলারিকে প্রত্যাখ্যান ক্ষুব্ধ স্যান্ডার্স সমর্থকদের

এ বি এন এ : ক্ষুব্ধ ডেমোক্রেটরা হিলারিকে ঠেকাতে প্রতিদ্বন্দ্বী দল রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ভোট দিয়ে বসতে পারেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে হিলারি ক্লিনটনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থকরা। দলীয় নেতৃত্বের যোগসাজশে স্যান্ডার্সকে প্রার্থী হতে ‘বাধা’ দেয়ার অভিযোগ ওঠার পর ক্ষুব্ধ হয়েছেন তারা। উইকিলিকসের ফাঁস করা ই-মেইলগুলোতে ন্যাশনাল কমিটি এবং বার্নি স্যান্ডার্সের মধ্যকার বিভাজন পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। আর এর ফলে তীব্র সমালোচনার মুখে সম্মেলনের আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দলপ্রধান ডেবি ওয়াজেরমেন শুলজ। এ অবস্থায় ডেমোক্রেটিক ভোটারদের মধ্যে বিভক্তি ও অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ সমর্থকরা হিলারিকে ঠেকাতে প্রতিদ্বন্দ্বী দল রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও ভোট দিয়ে বসতে পারেন।

স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল (বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল) থেকে ফিলাডেলফিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের কনভেনশন। কনভেনশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ‘দলীয় ঐক্য’ ধরে রাখার কথা বলে ডেবি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে অনুষ্ঠিত প্রাইমারি ও ককাসে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধির সমর্থন পাওয়া হিলারিকে চার দিনের এ কনভেনশনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনে ফিলাডেলফিয়ার রাস্তায় প্রতিবাদ বিক্ষোভে নামেন স্যান্ডার্স সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ডেমোক্রেট দল নিয়ে আশা-ভরসা শেষ হয়ে গেছে। এখন সম্মেলন শেষে কে বা কাকে প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হচ্ছে তাতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে একজন নারী মনোনয়ন পেলেও তাতে উচ্ছ্বাসের কিছু দেখছেন না তারা।

এদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক দলের এই প্রার্থী বাছাই ব্যবস্থাকে কারচুপি বলে সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়ে ডেমোক্রেট দলের একজন ভোটার শানা লিন বলেন, ‘ট্রাম্পের কথাই ঠিক। হিলারিকে আমি সমর্থন দিতে পারছি না।’ ভার্জিনিয়ার এই গৃহবধূ আরও বলেন, ‘এই পয়েন্টে আমি মনে করি, ট্রাম্প খুব প্রান্তিক সত্যটা তুলে ধরেছেন। কারণ হিলারি প্রমাণ করেছেন, তিনি আমেরিকানদের সঙ্গে মিথ্যার পর মিথ্যা বলে গেছেন। হিলারি মিথ্যাবাদী, বাজে লোক, বিভেদ সৃষ্টিকারী। তিনি কেবল নিজের কথাই ভাবেন।’ ডেমোক্রেটিক দলের সুপার ডেলিগেটদের প্রায় সবাই হিলারিকে সমর্থন দিয়েছেন। এই সমর্থনকেও সন্দেহের চোখে দেখছেন তৃণমূল ভোটাররা। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রার্থিতার আগ মুহূর্তে এমন কেলেংকারি সামনে আসায় মাশুল গুনতে হতে পারে হিলারিকে। সম্মেলন শেষে হিলারিকে প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হলেও দলের মধ্যে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, তাতে রিপাবলিকানদের সুবিধাই হবে। ক্ষুব্ধ স্যান্ডার্স সমর্থকরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ট্রাম্পকে ভোট দিলে ডেমোক্রেটের বিপর্যয় নেমে আসবে।

হিলারিকে টপকালেন ট্রাম্প : রিপাবলিকান সম্মেলনের পর দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনসমর্থন আরও বেড়ে গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ৬ পয়েন্ট বেড়েছে। জনমত জরিপ অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে ৩ পয়েন্টে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। সোমবার প্রকাশিত সিএনএন/ওআরসির জরিপ অনুযায়ী, ট্রাম্পের জনসমর্থন ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে হিলারির প্রতি মাত্র ৪৫ শতাংশ মানুষের সমর্থন রয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে পরিচালিত জরিপে হিলারির জনসমর্থন ছিল ৪৯ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ৪২ শতাংশ। সর্বশেষ উইকিলিকস কেলেংকারি নিয়ে ডেমোক্রেটিক দলে বিভাজন দেখা দেয়ায় হিলারির জনপ্রিয়তা আরও কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮৮২ জন নিবন্ধিত ভোটারের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন জরিপ অনুযায়ী কোনো দলের সঙ্গে নিবন্ধিত নন এমন ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের জনমসমর্থন বেড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত এক মাস কাটিয়েছেন বেশ জটিলতার মধ্য দিয়ে। এ সময়ে তিনি তার প্রচারণাবিষয়ক ম্যানেজারকে বরখাস্ত করেছেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button