এবিএনএ: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২৯ জুন (শনিবার) ঢাকার নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া আগামী ১ জুলাই মহানগরগুলোয় এবং ৩ জুলাই দেশের সব জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি।
আজ বুধবার বিএনপির এক যৌথ সভা শেষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঢাকার নয়াপল্টনে সকালে মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে দলটির এ যৌথ সভায় স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য কেন্দ্রীয় ও মহানগর কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, যেকোনো সময় তাঁর জীবনহানি হতে পারে। কিন্তু আদালতের দোহাই দিয়ে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণে তাঁরা এখন রাজপথে কর্মসূচি নিয়েছেন। এদিকে গত শুক্রবার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুই দিন আগে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়েছে।
বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্রে পেসমেকার ভালোভাবেই কাজ করছে। এখন তাঁকে কেবিনে রেখে চিকিৎসকেরা সর্বক্ষণিক চিকিৎসা দিচ্ছেন।
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দ্রুত তাঁকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার হৃদ্রোগের সমস্যা আগে থেকেই ছিল। হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। আগে একটা রিং পরানো হয়েছিল। সবকিছু পর্যালোচনা করে বিদেশি চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে গত রোববার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হৃদ্যন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয় বলে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা জানান।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত ২৭ অক্টোবর। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় ৫ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ স্থগিত করে তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তখন থেকে ছয় মাস পরপর মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।