
এবিএনএ : সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আবারো পাতানো নির্বাচনের ফন্দি আঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তাদের দাবি, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দলীয় প্রধানকে কারামুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে দলের শীর্ষ নেতারা এসব কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে একটি জালিয়াতির কাগজ দিয়ে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে একটি পরিত্যক্ত কারাগারে রেখে তিন দিন পর্যন্ত ডিভিশন দেয়নি। যার মাধ্যমে সরকার চেয়েছে তার মনোবল দুর্বল করতে। এখন তার জামিন দিতেও সরকার গড়িমসি করছে।’
মোশাররফ বলেন, ‘দেশ নাকি ডিজিটাল? অথচ নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টের দূরত্ব তিন মাইলের। এই তিন মাইল পার হয়ে ১০ দিনেও খালেদা জিয়ার মামলার নথি হাইকোর্টে এলো না।’ সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ইচ্ছে করেই খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘ করতে চায়। যাতে তারা নিজেদের অধীনে একদলীয় নির্বাচন করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে। কিন্তু আপনাদের সে স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।’ স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আপনারা যত ষড়যন্ত্র করেন না কেন খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে ফিরে আসবে। আমরা নেত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আর এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধনে জনগণের সরকারি প্রতিষ্ঠা করবো।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়াকে নয়, দেশের গণতন্ত্রকে বন্দী করেছেন। আপনারা চাইছেন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আবারও একক নির্বাচন করতে। কিন্তু আপনাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না। মনে রাখবেন এক মাঘে শীত যায় না। এর আগেও একটানা ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিলেন, মানুষ ক্ষমতায় আসতে দেয়নি।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘বেশি লোভ করবেন না। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। অনেক দিন শোষণ, লুট, খুন করেছে সরকার—এ সবকিছুর জবাব দিতে হবে।’ আব্বাস বলেন, ‘দেশের মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন এখনও সময় আছে শান্তির পথে আসুন। কারণ বাংলাদেশের মানুষ আঘাত পেলে তা কখনও ভুলে না। তাই অনুরোধ করবো মানুষের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। মানুষের ভোটের ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। ’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নির্বাচন নামে একটা প্রহসন করে ক্ষমতায় আসা সরকার খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। তারা চেয়েছিল খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করতে। কিন্তু তাদের সে আশা দেশের মানুষ শেষ করে দিয়েছে। খালেদা জিয়া এখন আপসহীন নোত্রী থেকে দেশের মানুষের মা হয়েছেন।’ নজরুল বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই আগামী নির্বাচনে যাবো। তাকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’ মানববন্ধনে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, কামাল ইবনে ইউসুফ, জয়নুল আবদিন ফারুক, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুস সালাম আজাদ, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, শিরিন সুলতানা, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২০-দলীয় জোট নেতা মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। এছাড়াও জোটের শরিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাপগার খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, শহিদুন্নবী ডাবলু, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, লেবার পার্টির (একাংশ) এমদাদুল হক চৌধুরী, হামদুল্লাহ আল মেহেদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।
Share this content: