জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

কোটা আন্দোলন: ‘নাগরিক প্রতিবাদে’ পুলিশের বাধা

এবিএনএ : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা সংগঠনের নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ওই কর্মসূচি থেকে দুই জনকে আটক করার অভিযোগও করেছেন আয়োজকরা, যদিও পরে তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভে অংশ নেয়া গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ন জুনায়েদ সাকী জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ফাহমিদুল হকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেহেনুমা আহমদ এবং সাবেক ছাত্র নেতা বাকি বিল্লাহকে আটক করা হয় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে পৌনে এক ঘণ্টা পর তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিকের ব্যানারে বিকাল চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন বেশ কিছু মানুষ। তারা কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদ খাঁনসহ তিন জনকে আটক এবং আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছিনে। আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের নির্লিপ্ততারও সমালোচনা করছিলেন ‘উদ্বিগ্ন নাগরিকরা’। তবে পুলিশ এসে জানায়, এখানে বিক্ষোভের অনুমতি নেই। এরপরও বেআইনি সমাবেশ করা হলে তাদেরকে আটক করা হবে। ফাহমিদুল হক বলেন, ‘আমি ঠিক আছি। আমার পরিচয় দেবার পরও পুলিশ আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। বাকী বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করলে আমি আর রেহনুমা আহমেদ ভ্যানে উঠে যাই এবং অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে চাই। অফিসার এসে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে আমি প্রিজন ভ্যানের ক্ষতিসাধন করেছি। তাই গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের সঙ্গে আমার ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়েছে, তারা গ্রেপ্তার করতে চেয়েছে, কিন্তু আন্দোলনকারীরা করতে দেয়নি।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মুখে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে জানান, কোটা বাতিল হবে। গত ২৭ জুলাই সংসদে তিনি আবার বলেন, কোটা থাকবে না। কিন্তু এতদিন ধরে চলে আসা পদ্ধতি বাতিল একটু জটিল এ কারণে সময় লাগবে। কিন্তু কোটা আন্দোলনের নেতারা কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের জন্য অস্থিরতা দেখাচ্ছে আর ২৭ জুন আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা রাশেদ খাঁন এক ভিডিও বার্তায় বলেন, তার ‘রক্ত গরম হয়ে গেছে’। তিনি অন্যদেরকে দ্রুত ক্যাম্পাসে ফিরে ‘কঠোর আন্দোলনে’ নামার তাগিদ দেন। ওই বার্তায় ‘মনে হয় তার বাপের দেশ’ বলেও একটি কথা বলেন রাশেদ আর এই বিষয়টি নিয়ে ঘোলাটে হয়ে উঠে পরিস্থিতি। ছাত্রলীগ অভিযোগ করছে, এই কথাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন রাশেদ। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করেন এক ছাত্রলীগ নেতা। আর রবিবার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার হন কোটা আন্দোলনের এই নেতা আর সোমবার তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

আর রাশেদ গ্রেপ্তারের একদিন আগে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাকে বেদম পেটানো হয়। এর প্রতিবাদ করতে গেলে সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদেরকেও পেটানো হয়। এই হামলা ছাত্রলীগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে ছাত্রলীগ দাবি করেছে, কোটা আন্দোলনের ভেতরে কোন্দলের জেরে নিজেরাই মারামারি করেছে।

Share this content:

Back to top button