
এবিএনএঃ সিঙ্গাপুরে ২ মাস ১০ দিন চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে নিজ দফতরে অফিস করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার সকাল ১০টার কিছু সময় পর তিনি সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে আসেন। প্রথমদিনের অফিসে গিয়েই হুংকার ছেড়েছেন তিনি। আর মাত্র এক-দেড়মাস পরেই মাঠে ঘাটে বেরিয়ে অভিযান পরিচালনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সেতুমন্ত্রী।
অফিসে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাদের বলেন, ‘তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ। স্বাভাবিক সব কাজই করতে পারবেন তিনি। প্রতিদিনই তিনি অফিস করবেন। তবে আপাতত ভারি কাজ না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এজন্য এক থেকে দেড়মাস সময় নেবেন তিনি। এরপরই রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তিনি সবসময় যেভাবে সড়ক-সেতুসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করতেন সেই কাজে লেগে যাবেন।’ এর আগে মন্ত্রণালয়ে আসার পর সচিবসহ কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এরপর তিনি কিছু ফাইলে সই করেন। পরে তিনি সম্মেলন কক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
এর আগে নিজ দপ্তরে এসে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো মরেই যেতাম। বেঁচে আছি। প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশা আল্লাহ এবার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করব। দ্বিতীয় ইনিংসে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা উড়াল সড়ক, ঢাকার যানজট নিরসন ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতা-কর্মী বন্ধুরা আমার জন্য দোয়া করেছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সবার মাঝে ফিরে এসে অনেক ভাল লাগছে। আজ থেকে আমি আবারও আগের মত আপনাদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করে যাবো।’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, ‘এবার ঈদ যাত্রীদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে। আগামী ২৫ মে গাজীপুর কোনাবাড়ী ও চন্দ্রায় দুটি উড়ালসড়ক ও চারটি আন্ডারপাস উদ্বোধন করা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তা উদ্বোধন করবেন। আশা করা যায়, এবারের ঈদে আর যানজট হবে না।’
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কাউন্সিল যথাসময়ে হবে। দলের একটি টিম সেভাবেই কাজ করছে।’ আগামীকাল তিনি দলীয় কার্যালয়ে যাবেন এবং সেতু ভবনে অফিস করবেন বলে জানালেন।অসুস্থতা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন সুস্থ আছি। তবে শারীরিক দুর্বলতাও আছে। এক দেড় মাস আগের মতো ছোটাছুটি করা যাবে না। দুই মাস পরপর আবার চিকিৎসকের কাছে ফলোআপ করাতে সিঙ্গাপুর যেতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ ভোরে ঢাকার নিজ বাসায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। এরপর ভারতের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠীর পরামর্শে ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২০ মার্চ ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়। পরে সুস্থ হওয়ার পর গত ৫ এপ্রিল মাউন্ট এলিজাবেথ থেকে ছাড়পত্র পান ওবায়দুল কাদের। গত বুধবার তিনি দেশে ফিরে আসেন।
Share this content: