এবিএনএ : সামান্য বৃষ্টি পড়লেই রাজধানী ঢাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি বহুদিনের সমস্যা। পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও নানা অভিযোগও দীর্ঘদিনের। এ অবস্থায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের দুই মেয়র দাবি তুলেন এই পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব যেন তাদের হাতে দেয়া হয়। অবশেষে সেই দায়িত্বে পেতে যাচ্ছেন তারা।
শনিবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়দার আলী জানান, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব যাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশনের হাতে। দুই মেয়রের দাবির মুখে এ উদ্যোগ নিচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১৯৮৯ সালে ঢাকা ওয়াসাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনসহ আরও কয়েকটি সংস্থা এই কাজে যুক্ত হয়। সিটি কর্পোরেশনের অভিযোগ, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো দায়িত্ব পালন করলেও ঢাকা ওয়াসা ব্যস্ত কোটি কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে। ফলে ওয়াসার এই ব্যর্থতার দায় সিটি কর্পোরেশনের ওপরে যাচ্ছে। আর জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহান নগরবাসীরা।
২০১৭ সালে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন ও উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ওয়াসার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। সাঈদ খোকন বলেছিলেন, জলাবদ্ধতার দায় ঢাকা ওয়াসার। তিনি ওয়াসাকে একটি ব্যর্থ সংস্থা হিসেবেও অবহিত করেন। তৎকালীন দুই মেয়রের এমন মন্তব্যের পর ওই বছরের ১৬ জুলাই জলাবদ্ধতা নিরসনের আন্তঃবিভাগীয় এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াসাকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে এই দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনকে নেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু আইনি জটিলতা তৈরি হয়। এজন্য সেই বৈঠকে আইন সংশোধনের জন্য কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়। কিন্তু সংশোধন এখনও হয়নি।
ঢাকার দুই বর্তমান মেয়রও জলবদ্ধতার জন্য ওয়াসাকে দায়ী করেন। তবে ওয়াসা বলছে, জলবদ্ধতা নিরসনের মূল দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। ২০১৭ সালের সেই আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় সভায় ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছিলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে যারা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে, ময়লা পানি তাদের দায়িত্বে থাকে না। এ অবস্থায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে সিটি কর্পোরেশনকে দেয়ার জন্য আমরা রোববার সভা আহ্বান করেছি।
Share this content: