লাইফ স্টাইল

সন্তানের হাতে মোবাইল? লাগাম টানুন বন্ধুত্বের মাধ্যমে—জানুন কার্যকর উপায়

শিশুদের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার ঘুম, মনোযোগ ও মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। বন্ধুত্বপূর্ণ পদ্ধতিতেই দরকার নিয়ন্ত্রণ।

এবিএনএ:  আজকের প্রযুক্তিনির্ভর যুগে স্মার্টফোন শিশুদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই স্মার্টফোনেই তৈরি হচ্ছে অসংখ্য সমস্যা—বিশেষ করে ঘুমের অভাব, মনোযোগের ঘাটতি এবং মানসিক চাপে ভোগা শিশু

যুক্তরাষ্ট্রের ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস’ পরামর্শ দিচ্ছে, শিশুদের ঘুমানোর সময় ফোন থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখা উচিত। বাস্তবে অভিভাবকদের কাছে এটি হয়ে উঠেছে এক বড় চ্যালেঞ্জ।

তবে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় আশার কিছু দিক উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়,

“ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে পর্যন্ত ফোন ব্যবহার করলে ঘুমে বড় সমস্যা হয় না, তবে ঘুমাতে দেরি হয় এবং সকালে উঠতেও কষ্ট হয়।”

বিশেষত ১১-১৪ বছর বয়সী কিশোরদের ক্ষেত্রে গবেষণা বলছে,

“যদি কেউ রাতে গোপনে ফোন ব্যবহার করে, তবে তা তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

গবেষক ব্র্যাডলি ব্রসনান বলেন,

“ঘুম আর স্ক্রিন একসঙ্গে চলে না। আপনি ঠিক করুন— স্ট্রিমিং করবেন, না ড্রিমিং?”

তিনি আরও জানান, ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে ঘুমের ঘাটতি মানসিক বিকাশ, একাগ্রতা এবং ওজন বৃদ্ধি সংক্রান্ত সমস্যার জন্ম দেয়।

কী করবেন অভিভাবকরা?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিভাবকদের উচিত—

  • শিশুর দৈনিক রুটিনে ফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করা

  • খাওয়ার সময়, পড়ার সময় ও ঘুমের আগে ফোন বন্ধ রাখা

  • সন্তানকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করা

  • স্কুলের প্রয়োজনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই অনলাইন ব্যবহার করতে দেওয়া

ব্রসনান বলেন,

“আমাদের মস্তিষ্ক একসঙ্গে একাধিক কাজ দক্ষভাবে করতে পারে না। পড়ার সময় ফোনে ঢুকলে মনোযোগ কমবেই।”

সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো—
সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করাএকসঙ্গে অ্যাপ ব্যবহার করা বা শেখার অভ্যাস গড়ে তোলা সন্তানকে নিরাপদ অনলাইন ব্যবহার শিখাতে সাহায্য করে।

শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য একটাই—

“সন্তান নিজে যেন নিজের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণের অভ্যাস গড়ে তোলে। সেটাই দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button