আমেরিকালিড নিউজ

‘উ. কোরিয়া পরিণতির কথা কল্পনাও করতে পারবে না’

এবিএনএ : উত্তর কোরিয়াকে ‘উন্মত্ত আগুনের মুখে’ ছুড়ে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই হুমকি ‘অতটা কড়া’ ছিল না মন্তব্য করে দেশটির বিরুদ্ধে নতুন করে আবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, উত্তর কোরিয়া যদি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে আঘাত করার কথা চিন্তাও করে থাকে তবে এর পরিণতির কথা ভেবে দেশটির ‘খুব, খুব ভয় পাওয়া উচিত’।
ট্রাম্প বর্তমানে নিউজার্সির বেডমিনস্টারে তার গল্ফ ক্লাবে অবকাশ যাপন করছেন। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে পাশে রেখে উত্তর কোরিয়াকে এই হুমকি দেনি তিনি। সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি এমন কাউকে আক্রমণের চিন্তা করে- যাদের আমরা ভালোবাসি বা যারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করে কিংবা যারা আমাদের মিত্র, তাহলে তাদের খুবই আতঙ্কিত হতে হবে। কারণ, তাদের সঙ্গে যা করা হবে তা তারা কখনও ভাবতেও পারবে না।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক কর্মসূচি জোরদার করার প্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র বিরোধের সৃষ্টি হয়। গত মাসে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এগুলোর আওতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডও রয়েছে। এরপর উত্তর কোরিয়াকে শায়েস্তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত একটি কঠোর অর্থনৈতিকি নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এরপর উত্তর কোরিয়া এক নজিরবিহীন বিবৃতির মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
এতে দেশটি মধ্য আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গুয়ামে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দেয়। উত্তর কোরিয়া থেকে গুয়ামের দূরত্ব তিন হাজার ৩৫৭ কিলোমিটার। তবে বিমানপথে সেখানে পৌঁছতে মাত্র ১৭ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড সময় লাগবে বলে জানায় বিবৃতিতে জানায় দেশটি। উত্তর কোরিয়ার এ হুমকির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশটিকে অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করার হুমকি দেন।
পরে বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও গলা চড়িয়ে উত্তর কোরিয়ার প্রতি কড়া বাক্যবাণ ছুড়ে দেন। তবে হুমকির পাশাপাশি আবারও কূটনৈতিক উপায়ে উত্তর কোরিয়াকে থামানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়াকে বাগে আনতে চীনের আরও অনেক কিছু করবে বলেও আশাবাদ জানান তিনি। চীনকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, আমি আপনাদের একথা বলব যে, উত্তর কোরিয়া যদি নিজেদের অবস্থা থেকে সরে আসে তাহলে তারা ভালো করবে। অথবা তারা বিশ্বের সেসব হাতেগোনা কয়েকটি দেশের পরিণতি বরণ করবে যাদের চরম দুর্দশা ভোগ করতে হয়েছে।
অবশ্য ট্রাম্প চোটপাট করলেও বৃহস্পতিবার ক্যালিফোনির্য়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে সংলাপের ওপরই গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি জানান, যদি প্রয়োজন হয় তাহলেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক অভিযানের কথা ভাববে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনও কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে। ম্যাটিস বলেন, যুদ্ধের ট্রাজেডি সম্পর্কে সবাই ভালোমতোই জানে, কাউকে এটি বলার দরকার নাই যে যুদ্ধ মাত্রই ধংসাত্মক হয়ে থাকে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবল জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বাধলে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যোগ দেবে তার দেশ।

Share this content:

Back to top button