ইইউর সঙ্গে চুক্তিতে আসতে ২ বছর না-ও লাগতে পারে: বরিস জনসন

এ বি এন এ : আগামী বছরের গোড়ার দিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে বৃটেন। এ জন্য একটি চুক্তিতে উপনীত হতে ২ বছর না-ও লাগতে পারে। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। খবরে বলা হয়, ইইউ সদস্যরাষ্ট্রগুলো যত দ্রুত সম্ভব ইইউ’র লিসবন চুক্তির ৫০ অনুচ্ছেদ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করতে লন্ডকে তাগাদা দিচ্ছে। বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হলে, ইইউ’র সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে ২ বছর সময় পাবে বৃটেন।
শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টি ও অনেক ইইউ-বিরোধী বৃটিশ ভোটারের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে যে, তাদের সিদ্ধান্ত দ্রুত পালন করছে না সরকার। এ উদ্বেগ প্রশমিত করতে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের সহযোগীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আগামী বছরের গোড়ার দিকে এ প্রক্রিয়া শুরু করার প্রত্যাশা তার। তবে কিছু আইনপ্রণেতা ও সরকারী কর্মকর্তা বলেছেন, আলোচনার টেবিলে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করার যথেষ্ট সময় পায়নি সরকার। তাই প্রস্থান প্রক্রিয়া তাড়াতাড়ি শুরু করলে বৃটেনের ভাগ্য হয়তো খারাপ চুক্তি জুটবে।
নিউ ইয়র্কে স্কাই নিউজ টেলিভিশনের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনসন বলেন, ভবিষ্যতে স¤পর্ক কী হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে বৃটেন। তার ভাষ্য, ‘আমরা এখন ইউরোপিয়ান বন্ধু ও আংশীদারদের সঙ্গে কথা বলছি। আমাদের প্রত্যাশা হলো, আগামী বছরের শুরুর দিকে আপনারা অনুচ্ছেদ ৫০-এর চিঠি পাবেন। আমি নিশ্চিত, ওই চিঠিতে আমরা কিছু মানদ- ঠিক করে দেব যে, কীভাবে ইইউর সঙ্গে আমাদের পরবর্তী স¤পর্ক এগিয়ে নেওয়া উচিৎ বলে আমরা মনে করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুর দিকে অনুচ্ছেদ ৫০ প্রয়োগ করার পর ২ বছর সময় থাকবে সমঝোতায় আসার। আমি মনে করি না, আমাদের এ দুই বছর লাগবে। তবে দেখা যাক।’
তবে কিছু কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ বলছেন যে, নজিরবিহীন এ সমঝোতা আলোচনা ২ বছরের চেয়েও বেশি লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে ইইউর সব সদস্যরাষ্ট্র একমত হলেই কেবল আলোচনার মেয়াদ বাড়বে। অন্যথায়, অর্থাৎ আলোচনার মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও সমঝোতা চুক্তিতে উপনীত হতে ব্যর্থ হলে বৃটেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মে বৃটেনের জন্য একটি ‘অনন্য চুক্তি’ চান। এ চুক্তিতে বাণিজ্য চুক্তি থাকবে ভালো শর্তে, পাশাপাশি অভিবাসনও সীমিত থাকবে। কিন্তু ইউরোপিয়ান নেতারা তা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, মুক্ত বাণিজ্য সম্ভব শুধুমাত্র যদি বৃটেন মানুষের অবাধ চলাচল অনুমোদন করে। তবে ইইউ-প্রস্থান তথা ব্রেক্সিট আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা জনসন ইইউ নেতাদের এ বক্তব্য মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘অভিবাসন ও বাণিজ্য আলাদা বিষয়। এদের একে অপরের সঙ্গে কোন স¤পর্ক নেই। আমাদের উচিৎ একটি অবাধ বাণিজ্য চুক্তি করা আর একই সঙ্গে নিজেদের অভিবাসন নীতিমালায় আমাদের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা।’
Share this content: