
এবিএনএ : ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার।’ বহুল প্রচলিত কথাটা প্রমাণ করে দেখালো ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের শুরুতেই পাঁচ মিনিটের মাথায় মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে দারুণ এক ফ্রি কিক থেকে গোল করে ইংল্যান্ড। আর ৬৯ মিনিটে প্যারিসিচের সমতাসূচক গোলের পর অতিরিক্ত সময়ের ১০৮ মিনেটে জয়সূচক গোলটি করেন মানজুকিচ। তাতে ইংল্যান্ডের তরুণ সোনালি প্রজন্মকে হারিয়ে ক্রোয়েশিয়ার সোনালি প্রজন্মের শেষ প্রতিনিধিরা বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠে গেল। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করল ক্রোয়েশিয়া। নকআউপ পর্বে নিজেদের পরপর তিন ম্যাচেই ১২০ মিনিট খেলে জয়ের নতুন রেকর্ড গড়লো ক্রোয়েশিয়া। ভেঙে চুরমার করে দিলো ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন। ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে ইংল্যান্ড ফুটবলার ডেল আলিকে ফাউল করেন মডরিচ। ফ্রি কিক পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। কিন্তু শুরুর ওই ফ্রি কিক হয়তো বেশি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি কেউ। আর তা থেকে দারুণ গোল করে ১-০ গোলের লিড এনে দেন ট্রিপার। ওই গোলেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ইংল্যান্ড। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৬৯ মিনিটে গোল করে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। আর অতিরিক্ত সময়ের ১০৮ মিনিটে এগিয়ে যায় ক্রোয়াটরা। রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দারুণ কিছু ফ্রি কিক দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ফ্রি কিক থেকে গোল করেছেন রোনালদো, ক্রুসরা। ফ্রি কিক থেকে রাশিয়ার গোল ছাড়া আরও কিছু দারুণ গোল হয়েছে ফ্রি কিক থেকে। কিন্তু নকআউট পর্বে ফ্রি কিক থেকে আর গোল পায়নি কোন দল। শেষ সেমিফাইনালে সেই বাধা পেরুলেন ট্রিপার। চোখ ধাধানো এক গোল করলেন এই ইংলিশ ফুটবলার। ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া পায়ে সমানে সমান বল নিয়ে খেলেছে। ক্রোয়েশিয়ার পালে বল ছিল ৫৫ ভাগ। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের পায়ে ছিল ৪৫ ভাগ বল। প্রথমার্ধে দু’দল আক্রমণ করেছে সমানে সমানে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে এবং অতিরিক্ত সময়ে আধিপত্য করেছে ক্রোয়েশিয়া। গোল করার পাশাপাশি ভালো কিছু গোলের সুযোগও তৈরি করেছে ক্রোয়াটরা। ক্রোয়েশিটা মোট গোলে আক্রমণ করেছে ১৮টি। এর মধ্যে লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে ৭টি শট। অন্যদিকে ইংলিশদের আক্রমণ ৮টি। তার মধ্যে লক্ষ্যে মাত্র দুটি শট ছিল তাদের। এছাড়া হ্যারি কেন ভালো কিছু সুযোগ পান। কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে পড়েন তিনি। প্রথমার্ধে ইংলিশদের আক্রমণগুলো বেশ গোছালো এবং ধারালো ছিল। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণগুলো ইংলিশদের রক্ষণে এসে থেমে গেছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ক্রোয়াটরা ছিলেন এগিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড ভালো সুযোগটি পায় ৯৯ মিনিটে। কিন্তু স্টোনস ওপর দিয়ে মারেন বল। ইংল্যান্ডের ব্যবধান বাড়াতে না পারার সুযোগটি খুঁড়াতে খুঁড়াতে মাঠ ছাড়ার আগে দারুণভাবে করে যান মানজুকিচ। তার গোলেই দল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে যায়।
Share this content: