
এবিএনএ : আবুল হোসেন। কর্মজীবী এই মানুষটি রাজধানীর পুরানা পল্টন থেকে প্রতিদিনের মতো কর্মস্থল বাংলামোটরে আসবেন বলে বাসা থেকে বের হন। কিন্তু মূল সড়কে এসে দেখেন যানবাহন আছে ঠিকই, কিন্তু রাস্তার দুই ধারে কোনো গাড়ি নড়ছে না। যাত্রীদের অনেকেই নেমে হাঁটছেন দেখে তিনিও তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাঁটা শুরু করলেন। পুরো পথ হাঁটতে গিয়ে রাস্তার দুই ধারে যানবাহনগুলো ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন।
এদিকে গুলশান এলাকা ঘুরে এসে প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গুলশান, লিঙ্করোড থেকে শুরু করে মহাখালী ও মগবাজার এলাকার রাস্তার দুই পাশে দুপুর থেকে তীব্র যানজট বিরাজ করছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ যানজটে আটকে আছেন। ১০ মিনিটের রাস্তা এক ঘণ্টায়ও পার হতে পারছে না গাড়িগুলো।
খিলগাঁও দুপুরের পর থেকে খিলগাঁও থেকে শুরু করে মৌচাক, মগবাজার এলাকায় যানজট বাড়তে থাকে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা বেড়ে গেছে। দুইটার পর থেকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের উপরেও দেখা গেছে অনেক গাড়ি আটকে আছে। এছাড়া রাজারবাগ থেকে মৌ্চাক, মৌচাক থেকে মগবাজার পর্যন্ত রাস্তার দু্ই পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন আটকে রয়েছে।
এদিকে পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করার ফলে হোটেল রূপসী বাংলা থেকে শুরু করে কারওয়ানবাজার এবং ফার্মগেট এলাকার রাস্তা ফাঁকা রয়েছে। এর ফলে পরিবহন সংকটের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন এই এলাকায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। মাঝে মাঝে দুই একটি গাড়ি এলে তাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন দুর্ভোগে থাকা মানুষগুলো।
কাকরাইল মোড়ে দীর্ঘক্ষণ বাসে বসে থেকে হাঁটা শুরু করে বেসরকারি চাকরিজীবী মিশু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজধানীজুড়ে যানজট হওয়ার মতো কর্মসূচি দেয়ার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সাধারণ মানুষের কথা ভাবা উচিত। এমন দুর্ভোগ মানা যায় না। কারণ আমরা তো রাজনীতি করি না।’
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা দুইটা থেকে চলছে আওয়ামী লীগের সমাবেশ। তবে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিলসহ সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। এতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় যানজটের।
সমাবেশকে ঘিরে শাহবাগ, প্রেসক্লাব ওই এলাকায় কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কথা আগেই জানিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। বলা হয়েছিলো বেলা একটা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত এই ব্যবস্থা থাকবে। তবে তিনটার অনেক আগে থেকেই ওই এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এতে যানজট প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে বলে মনে করেন তারা।
পুলিশের ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বেলা একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শাহবাগ হয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। এই সময় বিজয় সরনির উত্তরের, পশ্চিমের সব বাস লাভ রোড হয়ে মগবাজার ফ্লাইওভার দিয়ে কাকরাইল চার্চ হয়ে রাজমনি ক্রসিং দিয়ে ফকিরাপুল, ইউবিএল হয়ে চলে যাবে।
গুলিস্তান বা মতিঝিল থেকে আগত বিজয় সরনি অভিমুখী গাড়ি নাইটিংগেল দিয়ে রাজমনি ক্রসিং হয়ে কাকরাইল চার্চ দিয়ে মগবাজার ফ্লাইওভার হয়ে লাভ-রোড দিয়ে বিজয়সরনির দিকে চলে যাবে।
গাবতলী থেকে আসা গাড়ি মিরপুর রোড দিয়ে সায়েন্সল্যাব হয়ে নিউমার্কেট দিয়ে আজিমপুর হয়ে বকশীবাজার দিয়ে চানখাঁরপুল হয়ে বঙ্গবাজার দিয়ে গুলিস্তান, মতিঝিল, সদরঘাট চলে যাবে।
গুলিস্তান, মতিঝিল, সদরঘাট থেকে গাবতলী অভিমুখী গাড়ি বঙ্গবাজার দিয়ে চানখাঁরপুল হয়ে বকশীবাজার দিয়ে আজিমপুর হয়ে নিউমার্কেট দিয়ে সায়েন্সল্যাব হয়ে মিরপুর রোড হয়ে গাবতলী চলে যাবে।
Share this content: