এবিএনএ : নারদাকাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রীসহ চার নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) একটি দল। এ ঘটনার পরপরই সিবিআই কার্যালয়ে ছুটে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাকেও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন মমতা।এরআগে, সকালে গ্রেপ্তারের সময় বিধায়ক ফিরহাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নারদাকাণ্ডে আমাকে সিবিআই গ্রেপ্তার করল। স্পিকারের অনুমতি ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোর্টে দেখে নেব।’
ফিরহাদ ছাড়াও অভিযুক্ত মদন মিত্র, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ‘একজন বিধায়ককে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া এভাবে গ্রেপ্তার করা অনৈতিক। আদালতে সব বোঝাপড়া হবে। ফিরহাদ আত্মবিশ্বাসী, তাই আদালতের কথা বলেছেন।’ ঘটনাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে রাজ্য বিজেপির নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ফিরহাদ বা মদনের গ্রেপ্তারির সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।
সকাল ১১টার কিছু আগে সিবিআই কার্যালয় ‘নিজাম প্যালেস’ পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ১৫তলায় সিবিআই দপ্তরে চলে যান তিনি। প্রথমে কথা বলেন আইনজীবীদের সঙ্গে। এরপর সিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, যেভাবে এই চার রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বেআইনি। সাংবাদিকরা এ সময় তার সিবিআই কার্যালয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে মমতা বলেন ‘ওদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’ মমতা এ সময় বলেন, ‘আমাকেও গ্রেপ্তার করা হোক।’ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা সিবিআই কার্যালয়েই রয়েছেন।
উল্লেখ্য, যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩ জন বিধায়ক। তাই তাদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় বিধানসভা স্পিকারের অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে মামলায় তদন্তের জন্য রাজ্যপালের অনুমতি নেওয়া হয়। তারপরই চারজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটল।
২০১৬ সালের মার্চে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের একদল নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কের অর্থ গ্রহণের তথ্য ফাঁস করে আলোচনায় আসে দিল্লির নারদনিউজ ডটকম নামের একটি ওয়েবপোর্টাল। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কদের গোপনে অর্থ নেওয়ার ফুটেজও ফাঁস করা হয়। ‘স্টিং অপারেশন’-এর মাধ্যমে ওই ভিডিও ফুটেজ তৈরি করা হয়। পরে এই ঘটনায় যে মামলা হয় ততেই সোমবার গ্রেপ্তার হলেন এই চারজন।