জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

রোববার সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

এবিএনএ : ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে পাঁচদিনের সরকারি সফরে রোববার রাতে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুইজারল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় আল্পস অঞ্চলে গ্রাউবান্ডেনে পার্বত্য রিসোর্ট ডাভোসে আগামী ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘প্রতিবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব’।
প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইতিহাদ এয়ার ওয়েজের একটি ফ্লাইট রোববার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। খবর বাসসের
ফ্লাইটটি সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে। সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘ কার্যালয়ে স্থায়ী প্রতিনিধি শামিম আহ্সান বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে সিলভ্রেটা পার্ক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সুইজারল্যান্ড সফরকালে তিনি এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
ডাভোস যাওয়ার পথে শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ডাভোসে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেবেন এবং ডাব্লিউইএফের নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস সোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ফোরামের কর্মসূচির ফাঁকে শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন। শেখ হাসিনা ১৭ জানুয়ারি ডাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। একই দিন একই ভ্যানুতে অনুষ্ঠিত ‘শ্যাপিং এ নিউ ওয়াটার ইকনোমি’ শীর্ষক এক কর্মশালায়ও প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। শেখ হাসিনা ওইদিন বিকেলে কংগ্রেস সেন্টারে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়ায় হার্মসিং রিজিওনাল কো-অপারেশন বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী ১৮ জানুয়ারি ‘ওয়ার্ল্ডস আন্ডার ওয়াটার’ এবং ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব’ শীষর্ক এক অধিবেশনেও যোগ দেবেন।

এরপর ১৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মাল্টিপোলার ওয়ার্ল্ডে ‘প্রতিবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল’ নেতৃত্ব শীর্ষক ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক লিডারসদের এক অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ে অংশ নেবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একই দিন সন্ধ্যায় ডাভোস-ক্লোস্টারস্ এর স্কাটজাল্পে অনুষ্ঠিত ‘ওমেন লিডার্স ডিনার : নিউ ফ্রন্টিয়ার অব লিডারশিপ’ শীষর্ক এক কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। পাঁচদিনের সফর শেষে শেখ হাসিনা ২০ জানুয়ারি দুপুর ২টা ৩৫মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে জুরিখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন এবং ২১ জানুয়ারি দুবাই হয়ে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন।

ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম হলো জেনেভার কলোগনিভিত্তিক সুইজারল্যান্ডের একটি অলাভজনক ফাউন্ডেশন। এটি সুইস সরকার স্বীকৃত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। সংস্থাটির উদ্দেশ্য হলো— ব্যবসা, রাজনৈতিক, শিক্ষাগত এবং সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর অবস্থার উন্নতির মাধ্যমে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং শিল্পখাতের এজেন্ডাগুলোর বাস্তবরূপ দেওয়া।’

ফোরামটি প্রতিবছর জানুয়ারিতে ডাভোসে বার্ষিক সভার জন্য পরিচিত। চারদিনের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ হাজার শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, মনোনীত বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য একত্রিত হবেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সভায় ২০১৭ সালে নেতৃত্বের জন্য ৫টি চ্যালেঞ্জের ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে। এগুলো হলো— বৈশ্বিক সহযোগিতা শক্তিশালী করা, ‘শেয়ারড আইডেন্টিটি’র ধারণা পুনর্বহাল করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনর্জ্জীবিত করা, পুঁজিবাদের সংস্কার এবং ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’-এর প্রস্তুতি।

তিন হাজার অংশগ্রহণকারীর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাইরে থেকে আসবেন এবং ব্যবসায়ী ও সরকারের বাইরে এক-তৃতীয়াংশ অংশগ্রহনকারী উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন, যা হবে ডাভোসে এ পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যতিক্রম। জি-২০ ভুক্ত সবগুলো দেশসহ ৭০টি দেশের সরকারি প্রতিনিধিদল ছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেস এতে যোগদান করবেন।

এবারের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট ঝি জিনপিন। ১৯৭৯ সালে প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে যোগদানের পর এবারই চীনের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করবে। বৈঠকের কো-চেয়ারবৃন্দ, যারা বিভিন্ন আলোচনাসভা পরিচালনা করবেন এবং সম্মেলনের শুরুতে ও শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন। তারা হলেন— ডেনমার্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেলে থরনিং ইসমিডট, ব্যাংক অব আমেরিকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান ব্রায়ান ময়নিহান, অস্কার বিজয়ী তথ্যচিত্র নির্মাতা শারমিন ওবায়েদ-চিনয়, রয়াল ফিলিপস-এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্র্যান্স ভ্যান হউটেন।

Share this content:

Related Articles

Back to top button