জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

আ’লীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিকের মৃত্যু

এবিএনএ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমুল হক মিরুর গুলিতে আহত সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল শুক্রবার দুপুরে মারা গেছেন।নিহত শিমুল শাহজাদপুর বাজার এলাকার মো. আমানুল্লার ছেলে। এই সাংবাদিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে পৌর এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শহরে বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ দুগ্রুপের মধ্যে পূর্বশত্রুতার জের ধরে পৌর মেয়রের ছোটভাই হাকিমুল হক পিন্টু বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজাদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয় মাহমুদ সেখকে স্থানীয় হাইস্কুল মাঠ থেকে তুলে নিয়ে মেয়রের বাড়িতে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে। এতে বিজয়ের একটি হাত ও একটি পা ভেঙে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাবনার বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন বিকালে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় দেড়ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।

একপর্যায়ে অবরোধকারীরা মিছিল নিয়ে পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর বাড়ী ঘেরাওয়ের চেষ্টা করে। এসময় পৌর মেয়র তার লাইসেন্সকৃত শর্টগানের কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি শিমুল গলায় ও মাথায় এবং পথচারী রং মিস্ত্রী সরোয়ার হোসেন ও অপু পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিক শিমুলের অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দুপুরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জের কোনাবাড়ি মোড় এলাকায় তিনি মারা যান।

ওইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ মেয়রের বাড়ি থেকে শর্টগান ও দুই রাউন্ড গুলির খোসা জব্দ করে এবং পৌর মেয়রের ছোট ভাই পিন্টুকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার শাহজাদপুরে অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে ছাত্রলীগ। এদিকে, সাংবাদিক শিমুল হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে শাহজাদপুর পৌর এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল হক বলেন, ঘটনার রাতেই পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু, তার ছোট ভাই হাকিমুল হক পিন্টু ও হাবিবুল হক মিন্টুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে মেয়রের আরেক ছোট ভাই হাবিবুল হক মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button