ফিচার

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয়

শক্তির জন্য দেহে শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজন। ডায়াবেটিস হলে শর্করা ও অন্যান্য খাবার সঠিকভাবে শরীরের কাজে আসে না। তাতে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তবে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে ডায়াবেটিস অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থভাবে জীবনযাপন করা যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয় : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চারটি নিয়ম মানতে হয় ক. নিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ; খ. সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম; গ. ওষুধ এবং ঘ. শিক্ষা।

নিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ : ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা ডায়াবেটিস হওয়ার আগে যে ধরনের থাকে, পরেও একই থাকে। পুষ্টির চাহিদার কোনো তারতম্য হয় না। খাদ্যের নিয়ম মেনে চলার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, স্বাস্থ্য ভালো রাখা।

ব্যায়াম : রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে, ইনসুলিনের কার্যকারিতা ও নিঃসরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৪৫ মিনিট হাঁটলে শরীর যথেষ্ট সুস্থ থাকবে। শারীরিক অসুবিধা থাকলে সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।

ওষুধ : সব ডায়াবেটিক রোগীকেই খাদ্য, ব্যায়াম ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে এ দুটি যথাযথভাবে পালন করতে পারলে রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে ইনসুলিন ইনজেকশনের দরকার হয়। টাইপ-২ ডায়বেটিস রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসক শর্করা কমানোর জন্য খাবার বড়ি দিতে পারেন।

শিক্ষা : ডায়াবেটিস আজীবনের রোগ। সঠিক ব্যবস্থা নিলে এ রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ব্যবস্থাগুলো রোগীকেই নিজ দায়িত্বে মেনে চলতে হবে। রোগীর পরিবারের সব সদস্যকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারে। তাই এ রোগের সুচিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিস সর্ম্পকে রোগীর যেমন শিক্ষা প্রয়োজন, তেমনি রোগীর নিকটাত্মীয়দেরও এ রোগ সর্ম্পকে কিছু জ্ঞান থাকা দরকার।

খাবার ও বাড়তি সতর্কতা : আঁশবহুল খাবার, যেমন ডাল, শাকসবজি, টক ফল ইত্যাদি বেশি খেতে হবে। উদ্ভিদ তেল অর্থাৎ সয়াবিন ও সরিষার তেল এবং সব ধরনের মাছ খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। ওজন স্বাভাবিক রাখতে হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে। চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টিফল ইত্যাদি কিছুটা হিসেব করে খেতে হবে। ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস ইত্যাদি কম খেতে হবে। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হলে অর্থাৎ অসুস্থ অবস্থায় বিশেষ খাদ্যব্যবস্থা জেনে নিতে হবে।

লেখক : ডায়াবেটিস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ

অধ্যাপক, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button