আমেরিকাএবিএনএ স্পেশাল

নাইন-ইলেভেন বিল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বিক্রির হুমকি সৌদি আরবের

এবিএনএ : ওবামা প্রশাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যদের হুঁশিয়ারি করে সৌদি সরকার বলেছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলায় সৌদি আরবকে দায়ী করে ‘নাইন-ইলেভেন বিল’ পাস হলে তার কাছে থাকা ৭৫ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন সম্পদ বিক্রি করে দেয়া হবে।

সৌদি আরবের এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন কংগ্রেসে ওই বিলটি আটকাতে দেন-দরবার শুরু করেছে হোয়াইট হাউস।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সৌদি সফরের আগে শনিবার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে এবিএনএ । বারাক ওবামা আগামী বুধবার সৌদি আরব সফরে যাবেন।

২০০১ সালের টুইন টাওয়ার হামলায় অভিযুক্ত বিদেশি দেশ ও সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের মামলা করার অনুমোদন-সংক্রান্ত নাইন-ইলেভেন বিল মার্কিন কংগ্রেসে পাসের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিলটি পাস না করতে দাবি জানিয়ে আসছে সৌদি আরব। বিলটি পাস হলে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকৃত ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের ট্রেজারি সিকিউরিটিস বিক্রি করে দেয়ার হুঁশিয়ারি করেছে।

গত মাসে ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল আল-জুবায়ের ব্যক্তিগতভাবে তার দেশের মনোভাবের কথা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন, যদি ওই বিল পাস করা হয় তাহলে সৌদি আরবের কাছে থাকা ৭৫ হাজার কোটি ডলার মূল্যের মার্কিন ট্রেজারি বিল এবং অন্যান্য সম্পদ বিক্রি করে দেবে তারা।

চলতি বছরের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের জুডিসিয়ারি কমিটিতে বিলটি পাস হয়। এতে ‘সন্ত্রাসী হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিহত’ হওয়ার মতো ঘটনায় বিদেশি সরকারের ওপর থেকে আইনি সুরক্ষা তুলে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন সেটি কংগ্রেসে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

জানা যায়, সৌদি আরবের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ওবামা প্রশাসন এরই মধ্যে কংগ্রেসকে নাইন-ইলেভেন বিল থেকে সৌদির আপত্তি-সংক্রান্ত অংশ বাদ দিতে অনুরোধ জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে আইন প্রণেতা ও পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, সৌদি আরব যদি তার হুমকি বাস্তবায়ন করে তাহলে দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়ে পড়বে। তবে একই সঙ্গে বিপাকে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিও।

ওবামা প্রশাসন আইন প্রণেতাদের সতর্ক করেছে, এই বিল পাস হলে আন্তর্জাতিকভাবে আইনি ঝুঁকিতে পড়বে মার্কিনরা।

এদিকে নাইন-ইলেভেন হামলায় আহত ও নিহতের স্বজনেরা চাইছে এই আইন পাস করা হোক এবং এ জন্য তারা আইন প্রণেতাদের চাপও দিচ্ছে। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে হামলায় এক নিহতের স্ত্রী মেন্ডি কিনবার্গ বলেন, “আমাদের সরকার যেন মার্কিনদের নয়, সৌদির কথাই বেশি ভাবছে।”

আগামী বুধবার সৌদি বাদশা সালমান ও তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষৎ করতে রিয়াদ সফরে যাবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে ওই বৈঠকের এজেন্ডায় নাইন-ইলেভেনের বিষয়টি থাকবে কি না সেটা এখনো পরিষ্কার নয়।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই দেশে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

সৌদির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলায় সৌদি আরবের কোনো যোগসূত্র ছিল

Share this content:

Related Articles

Back to top button