লাইফ স্টাইললিড নিউজ

ফুসফুস পরিষ্কার করবেন যেভাবে

এবিএনএ : ‌শিরোনাম দেখে হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে আসলেই ফুসফুস পরিষ্কার করা সম্ভব কিনা। সুখবর হচ্ছে, সম্ভব। একজন মানুষের সমগ্র স্বাস্থ্যের জন্য ফুসফুসের স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। ফুসফুস হচ্ছে আত্ম-পরিষ্কারক অঙ্গ, অর্থাৎ এটির সংস্পর্শে দূষণকারী পদার্থ আসা বন্ধ হলে নিজে নিজে সেরে ওঠতে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ ধূমপান ছেড়ে দিলে ফুসফুস নিজেই নিরাময় প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। ক্ষতিকারক পদার্থ (যেমন- সিগারেটের ধোঁয়া) ফুসফুসের সংস্পর্শে আসলে বুকে ভার ভার অনুভূতি অথবা প্রদাহ হতে পারে। ফুসফুসে শ্লেষ্মা জমে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বসতি গড়ে ওঠে, যা ভার ভার অনুভবে অবদান রাখে।

আপনার বুকে ভারী অনুভূত হলে অথবা অন্যান্য অস্বস্তিকর অনুভূতি হলে হতাশ হবেন না। প্রথম করণীয় হলো, ধূমপানের মতো বাজে অভ্যাসগুলো ছেড়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। চিকিৎস প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসা করবেন। এছাড়া ফুসফুস পরিষ্কার করতে কিছু ঘরোয়া টেকনিকও অনুসরণ করতে পারেন। এসব মেথডে ফুসফুস পরিষ্কারের পাশাপাশি বাতাস চলাচলের পথ খুলতে পারে, ফুসফুসে বাতাস ধারণের ক্ষমতা বাড়তে পারে ও প্রদাহ কমতে পারে। এখানে ফুসফুস পরিষ্কারের তিনটি ঘরোয়া পদ্ধতি দেয়া হলো। এর পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করলে, গ্রিন টি পান করলে ও প্রদাহনাশক খাবার খেলে আরো ভালো ফল পাবেন।

গরম পানির ভাপ নেয়া: গরম পানির ভাপ নেয়াকে স্টিম থেরাপি বা স্টিম ইনহেলেশনও বলা হয়। গরম পানির ভাপ নিলে ফুসফুসে বাতাস চলাচলের পথ খুলে ও শ্লেষ্মা বের হয়ে যেতে পারে। যা শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ করে তোলে। একটি ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগে যারা শ্বাসক্রিয়ার কাঠিন্যতায় ভুগেছেন তারা গরম পানির ভাপ নেয়াতে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা কমেছে। কিন্তু ভাপ নিলে দীর্ঘস্থায়ী উপকার পাওয়া যায় কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না, আরো গবেষণার অপেক্ষা করতে হবে।

কৃত্রিম কাশি দেয়া: কাশি হলো শ্লেষ্মায় আটকে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের করতে শরীরের প্রাকৃতিক উপায়। কৃত্রিম কাশিতেও ফুসফুসের অতিরিক্ত শ্লেষ্মা আলগা হয়ে বের হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসকেরা দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুস রোগীদের ফুসফুস পরিষ্কারে এই এক্সারসাইজ করতে পরামর্শ দেন:

একটি চেয়ারে বসে কাঁধকে শিথিল করুন।

পা দুটিকে মেঝেতে সমতলে রাখুন।

উভয় বাহুকে ভাঁজ করে পেটের ওপর রাখুন।

নাকের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন।

সামনের দিকে ঝুঁকে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এসময় বাহুগুলোকে পেটের সঙ্গে চেপে ধরুন।

শ্বাস ছাড়ার সময় ২-৩ বার কাশি দিন। এ সময় মুখ একটু খোলা রাখুন।

বিশ্রাম নিয়ে আবারও প্রয়োজনানুসারে রিপিট করুন।

মাধ্যাকর্ষণের সাহায্যে শ্লেষ্মা দূর করুন: মাধ্যাকর্ষণের সাহায্যে শ্লেষ্মা বের করতে ভিন্ন ভিন্ন পজিশনে শুতে হয়। এ প্রক্রিয়াকে পস্টুরাল ড্রেনেজ বলে। এ চর্চায় শ্বাসক্রিয়া উন্নত হয় ও ফুসফুসের সংক্রমণ প্রশমিত বা প্রতিরোধ হয়। পজিশনের ওপর ভিত্তি করে পস্টুরাল ড্রেনেজ ভিন্ন হয়ে থাকে।

পদ্ধতি ১
মেঝে বা বিছানায় চিৎ হয়ে শুতে হবে। নিতম্বের নিচে বালিশ রাখুন যেন বুক নিতম্বের তুলনায় নিচে থাকে। ধীরে ধীরে নাকের মাধ্যমে শ্বাস নিন ও মুখের মাধ্যমে শ্বাস ছাড়ুন। শ্বাস ছাড়ার সময়কাল শ্বাসগ্রহণের দ্বিগুণ হবে, যাকে ১:২ ব্রিদিং বলে। কিছু মিনিট চালিয়ে যান।

পদ্ধতি ২
মাথাকে একটি বাহু বা বালিশের ওপর রেখে এক কাতে শুতে হবে। নিতম্বের নিচে বালিশ রাখুন। ১:২ ব্রিদিং প্যাটার্ন চর্চা করুন। কিছু মিনিট অব্যাহত রেখে অন্য কাতে রিপিট করুন।

পদ্ধতি ৩
মেঝের ওপর বালিশের একটি স্ট্যাক রাখুন। এবার পেটকে বালিশগুলোর ওপর রেখে শুতে হবে। এ সময় বুক নিতম্বের তুলনায় নিচে থাকবে। মাথাকে সাপোর্ট দিতে দুই বাহু ভাঁজ করে কপালের নিচে রাখুন। কিছু মিনিট ধরে ১:২ ব্রিদিং প্যাটার্ন চর্চা করুন।

তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

Share this content:

Related Articles

Back to top button