লাইফ স্টাইল

দিনে দু’বার ঘুমানো জরুরি কেন?

এবিএনএ : আমাদের সবার জন্য ঘুম অত্যন্ত জরুরি। শরীরের ভালো-মন্দের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে ঘুমের। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ঠিক মতো ঘুম না হলে মৃত্যু পর্যন্তও ঘটতে পারে।

চিকিৎসকরা মনে করেন, রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমালেই চলবে। তাহলেই আর শরীর নিয়ে ভাবতে হবে না। কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় নতুন এক তথ্য পাওয়া গেছে।
টানা ৮ ঘণ্টা না ঘুমিয়ে দিনে দু’বার ৪ ঘণ্টা করে ঘুমালে শরীরের বেশি উপকার হয়। দিনে দু’বার ঘুমালে শরীরে যা উপকার হয়, তা একবার ঘুমালে হয় না।
এখন প্রশ্ন হলো অনেকে দিনের বেলা অফিসে থাকে। তাহলে দু’বার ঘুমাবে কী করে?
গবেষকদের মতে, দিনের বেলা অফিসে থাকলেও চোখের আরাম জরুরি। প্রাচীন পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ ছিলেন যারা সকাল-রাত মিলিয়ে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেন।
এই ধরনের নিয়মই নাকি সবাই অনুসরণ করতেন। কিন্তু যখন থেকে বিদ্যুতের আবিষ্কার হয়েছে, তখন থেকেই স্লিপিং সার্কেলে পরিবর্তন এসেছে।
এই পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ রয়েছে যে দেশের নাগরিকরা “বাইফেসিক স্লিপ” এ বিশ্বাস করে থাকেন। অর্থাৎ দিনে দু’বার ঘুমানো জরুরি এটাই তারা মনে করতেন।
এদের মধ্যে অনেকেই রাতের বেলা ৬ ঘণ্টা এবং দিনের বেলা ২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে থাকেন। কেউ কেউ তো আবার রাতে ৪ ঘণ্টা আর দিনে ৪ ঘণ্টা ঘুমাতে অভ্যস্ত।
তবে প্রাচীনকালে কী যুক্তি মেনে লোকেরা দু’বার ঘুমাতেন, তা জানা নেই। কিন্তু আধুনিক গবেষণা অনুসারে দু’ধাপে ঘুমালে ব্রেনের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি এমনকী মনোযোগেরও উন্নতি ঘটে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ অনিদ্রার শিকার। আর এর পেছনে মূল কারণ নাকি ঘুমের প্যাটার্ন বদলে যাওয়া।
বিজ্ঞানিরা মনে করেন, টানা ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চক্করেই নাকি ঘুমে এমন ব্যাঘাত ঘটতে শুরু করে, যা দিনে দু’বার ঘুমালে কখনই হয় না। তাই ঘুমকে দু’ভাগে করে নিলে যে অনেক রোগেরই প্রকোপ কমে যায়।
স্লিপ সায়েন্টিস্টদের মতে, বিদ্যুতের আবিষ্কারের আগে সূর্যালোক দেখেই সময় নির্ধারণ করা হত। তাই তো সন্ধ্যা হতেই কাজ শেষ করে শুয়ে পরতেন, উঠতেন একেবারে ভোর রাতে। তাই তো দুপুর বেলা একটু বিশ্রাম না নিলে চলতো না। এই অভ্যাস এখন বদলে গেলেও আমাদের শরীর কিন্তু ভুলেনি। তাই তো আমাদের সবারই লাঞ্চের পর জমিয়ে ঘুম আসে।
তাই সব শেষে বলা যায়, বিজ্ঞান এবং ইতিহাস, উভয়ই দিনে দু’বার ঘুমানোর ব্যাপারে একমত।
তবে অনেকে এর বিরোধীতাও করেছেন, কারণ আমরা প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা কাজ করে থাকি। তার ফাঁকে কয়েক ঘণ্টা ঘুমনো একেবারে অসম্ভব। তবে যাদের পক্ষে সম্ভব, তারা অবশ্যই ইচ্ছা হলে দু’বার ঘুমাতে পারেন। শুধু খেয়াল রাখবেন প্রতিবারই ঘুমটা যেন ভালো করে হয়।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button