এবিএনএ : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া বিপুল অংকের ডলারের মধ্যে উদ্ধার হওয়া এক কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।
সোম ও মঙ্গলবার এ অর্থ জমা হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ।
তিনি জানান, ফিলিপাইন থেকে উদ্ধার হওয়া ৪৮ কোটি ৮২ লাখ ফিলিপিনো মুদ্রা পেসো বা এক কোটি ডলার সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জামা হয়েছে। আর ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার জমা হয়েছে আজ মঙ্গলবার।
শুক্রবার ফিলিপাইনের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কাউন্সিল (এএমএলসি) দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজের কাছে নগদে এক কোটি ৪৬ লখা ৩০ হাজার ডলার হস্তান্তর করে।
ফিলিপাইনের ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রসাদ দেবনাথ ও যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রব গত ৭ নভেম্বর ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় যান। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কিম অং পুরো অর্থ নগদে দিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ছিল ডলারে। আর ৪৮ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার ছিল পেসোতে। দুইয়ে মিলে এর অংক প্রায় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
দেশটির আদালত নগদে এ অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেন। তবে আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী এক দেশ থেকে অন্য দেশে নগদে এত অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। ফলে পেসোতে থাকা মুদ্রা ডলারে রূপান্তর করে ফিলিপাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের হিসাবে জমার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের হিসাবে নিতে হচ্ছে।
ফিলিপাইনের সিনেটে কয়েক দফা শুনানি শেষে কিম অং তার আইনজীবীর মাধ্যমে চার দফায় এক কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ জমা দেন। এ অর্থ বাংলাদেশের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন ফিলিপাইনের আদালত। এরপর কোন প্রক্রিয়ায় অর্থ ফেরত দেওয়া হবে সে বিষয়ে একটি মামলা (স্যুট এক্সিকিউশন) হয়। সম্প্রতি সেই মামলারও রায় হওয়ার পর কিছু প্রক্রিয়া শেষে এখন তা বাংলাদেশকে হস্তান্তর করা হলো।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক সাইবার চক্রের হ্যাকাররা সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে। বিপুল পরিমাণ এ অর্থের মধ্যে স্থানান্তরিত করে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে (আরসিবিসি) পাঠানো হয়। আর শ্রীলঙ্কার প্যান এশিয়ান ব্যাংকে যায় দুই কোটি ডলার।
সুইফট কোডের মাধ্যমে অভিনব এই চুরির পরপরই শ্রীলঙ্কার অর্থ ফেরত পাওয়া গেলেও ফিলিপাইনে আসা সব অর্থ উদ্ধার করা যায়নি। আট কোটি ১০ লাখ ডলারের অধিকাংশই রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে দেশটির বিভিন্ন স্থানের জুয়ার টেবিলে চলে যায়। এভাবেই ওই টাকা আইনগতভাবে বৈধ টাকায় (সাদা টাকা) পরিণত করে চোররা।