

এবিএনএ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার সংবর্ধনায় জনগণের উদ্দেশে নির্বাচনী বার্তা দেবেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণসংবর্ধনা এবং সেদিন সংবর্ধনাস্থল জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গণসংবর্ধনাস্থল প্রস্তুতি পরিদর্শনকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন এবং দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় শনিবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, গণভবনে বিশেষ বর্ধিতসভায় প্রধানমন্ত্রী নেতাকর্মীদের নির্বাচনী দিকনির্দেশামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। গণসংবর্ধনায় হয়তো তিনি জনগণের উদ্দেশে আগামী জাতীয় নিবার্চন সম্পর্কে বার্তা দেবেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে এখানে একদিকে ২০ হাজার আসন আরেকদিকে ১০ হাজারসহ মোট ৩০ হাজার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কয়েক লাখ লোকের স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত হবে এবং চারদিকে সে আওয়াজের ধ্বনি উঠছে বলে মন্তব্য করেন কাদের। ‘চলো চলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলো, চলো চলো ঢাকা চলো’-এই স্লোগানে মুখরিত করতে অলরেডি ঢাকার আশপাশ সবাই প্রস্তুতি সভা করে ফেলেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই গণসংবর্ধনা থেকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের কোন নির্দেশনা আসতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নিবার্চন আছে, সেটাই তো মূল ফোকাস। নির্বাচনকে সামনে রেখে তার বক্তব্য আছে। “বর্ধিতসভাগুলোয় তিনি (শেখ হাসিনা) নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এবার হয়তো তিনি জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন, মেসেজ দেবেন নিবার্চন সম্পর্কে। নির্বাচন সামনে রেখে মহড়া কি না এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আমরা জাতির পক্ষ থেকে, জনগণের পক্ষ থেকে, এটা তার প্রাপ্য। তার এই প্রাপ্য তাকে দিতেই হবে। কৃতজ্ঞ জাতি অকৃতজ্ঞ হয়ে যাবে যদি শেখ হাসিনার যে প্রাপ্য, তার যে অর্জন, উন্নয়ন; এটা শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বের বিস্ময়। সারা দুনিয়া তাকে সম্মান করে, প্রশংসা করে আমরা কেন তাকে সেটা করব না। আমরা কেন তাকে যথাযথ সম্মান দিতে কার্পণ্যবোধ করব? সেই কারণেই এ সংবর্ধনা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে সম্পর্কিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, উনি (মির্জা ফখরুল) অনেক কথাই বলবেন। কারণ গণতন্ত্র থেকে সাত ধারা তুলে দেয়ার ফলে তাদের মুখে এটা শোভা পায় না। তারা নিজেরাই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ, তাদের মুখে অন্যকে দুর্নীতি বলা এটা শোভা পায় না।বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে স্বর্ণ নিয়ে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠিন শান্তি নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে এ ধরনের অপকর্ম করার কোনো সুযোগ নেই। এ পর্যন্ত আমরা যেটা জানি-সেটা কেলেরিক্যাল এরর। এছাড়া ভেতরে কোন অনিয়ম হয়ে থাকে, অপকর্ম করে থাকে তদন্তে বের হয়ে আসে তাহলে কঠিন শাস্তি। তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যকে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য (বিউটি) উল্লেখ করে কাদের বলেন, পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ঠিক আছে, সুস্থ বক্তব্য ঠিক আছে, গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলা ঠিক আছে। গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলাই তো গণতন্ত্রের বিউটি। কিন্তু আজ আমাদের প্রতিপক্ষ বিএনপি। তারা বলছেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। অথচ তারাই অবিরাম অগণতান্ত্রিক ভাষায় বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল । এছাড়াও বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কার্যনির্বাহী সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, আনোয়ার হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।