বিনোদনলিড নিউজ

রোহিঙ্গা শিশুর ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে বিশ্বকে যত্নবান হতে আহ্বান প্রিয়াঙ্কার

এবিএনএ : মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা দেখে আসা রোহিঙ্গা শিশুরা রংতুলি দিয়ে কাগজে এত দিন শুধু পুড়িয়ে দেওয়া গ্রাম, চারপাশে পড়ে থাকা লাশ, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া-সহিংসতা আর ধ্বংসের এমন ছবিই আঁকত। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার কয়েক মাস পর এই শিশুরাই এখন প্রকৃতি, পরিবার ও গ্রামের জীবনের ছবি আঁকতে শুরু করেছে। তাদের আঁকা ছবি তুলে ধরছে নতুন জীবন ও সুন্দর আগামীর স্বপ্ন।

জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) শুভেচ্ছাদূত ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া গতকাল বুধবার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী শিবিরে গেলে তাঁকে নিজেদের আঁকা ছবি উপহার দেয় রোহিঙ্গা শিশুরা। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কা তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা শিশুর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার স্বার্থে বিশ্বকে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান।

কক্সবাজার সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল উখিয়ার জামতলী, বালুখালী ও ময়নার ঘোনার রোহিঙ্গা শিবিরে গিয়ে নারী ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন বলিউডের তারকা প্রিয়াঙ্কা। তিনটি শিবিরে দীর্ঘ সময় ধরে তিনি রোহিঙ্গাদের কথা শুনেছেন, শিশুদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। এর মধ্যে বালুখালী শিবিরে ইউনিসেফের অর্থায়নের বেসরকারি সংস্থা মুক্তি পরিচালিত শিশুবান্ধব কেন্দ্রে শিশুদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক নেচে-গেয়ে আর ছবি এঁকে সময় কাটান তিনি। এ সময় শিশুদের পড়াশোনার কী অবস্থা, তাও জানতে চান তিনি। রোহিঙ্গা শিশুরা ইংরেজিতে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত বলার সময় তাদের সঙ্গে গলা মেলান তিনি। বিদায়ের সময় শিশুরা তাঁকে বাঁশের ঝুঁড়ি ও ছবি উপহার দেন। শিশুদের কাছ থেকে উপহার পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন এই নায়িকা। যাওয়ার সময় হাত উঁচিয়ে প্রথমে বলেন, ‘ফির মিলেঙ্গে।’ পরে বাংলায় বলেন, ‘আবার দেখা হবে।’

গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় প্রথমে উখিয়ার পালংখালীর জামতলি অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরে যান প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। গাড়ি থেকে নেমে কাঁদামাটির অনেকটা পথ হেঁটে শিবিরের ভেতরে নারী ও শিশুবান্ধব কেন্দ্রে যান তিনি। ওই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা একটি সাহায্য সংস্থার কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, এখানে প্রিয়াঙ্কা মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নারীর সঙ্গে কথা বলেন। নির্যাতনের বীভৎস বর্ণনা শুনে তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।

ইনস্টাগ্রামে প্রিয়াঙ্কা গতকাল লিখেছেন, বাংলাদেশে আসার পর থেকেই রোহিঙ্গা শিশুরা গাদাগাদি করে শিবিরে থাকছে। তিন লাখ রোহিঙ্গা শিশুর জন্য বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র জায়গা, যেখানে এসে তারা নিজের পরিচয় জানছে।

প্রিয়াঙ্কা মনে করেন, ‘শিশুটি কোথা থেকে এল কিংবা কী তার অবস্থা, সেটা বিবেচ্য নয়। ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো শিশুই বেড়ে উঠতে পারে না। তাদের প্রতি সারা বিশ্বের যত্নবান হওয়া উচিত। আমাদের সবার যত্নবান হওয়া উচিত।’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button