এবিএনএ : বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, সস্তা শ্রম নয়, শ্রমিকদের কাজের নৈপুণ্যে যে পোশাক তৈরি হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী সেটার জনপ্রিয়তার কারণেই তৈরি পোশাক খাতের বিস্তার হয়েছে। যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের সঙ্গে আছে এবং থাকবে।
শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক-ইন সেন্টারে ‘রি-ইমার্জিং ফ্রম দ্যা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: অ্যান অ্যাকাউন্ট অন দ্য থার্ড অ্যানিভার্সারি’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির তিনবছরের প্রেক্ষাপটে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা; সেখানে পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এতে অন্তত ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত হন। এ ঘটনাটি সারা বিশ্বে ভবন ধসে সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা।
কারখানা পরিদর্শনে আসা ক্রেতাদের দুটি সংগঠন অ্যাকোর্ড এবং অ্যালায়েন্স বাংলাদেশে কতদিন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে এমন তর্কে নিজ দেশের অবস্থান তুলে ধরে বার্নিকাট বলেন, অ্যাকোর্ড, অ্যালায়েন্সের অবদান প্রথম দিকে বোঝা না গেলেও, এখন এটার ফল পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, তারা গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করেছে।
রানা প্লাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রানা প্লাজার মতো একটি খারাপ ঘটনা পুরো খাতকে কলঙ্কিত করে। কিন্তু এর পরও তো অনেক ভালো কারখানা রয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি মার্গারেথ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে আদর্শিক ও ভালো কারখানাগুলোর বেশ কয়েকটি বাংলাদেশে অবস্থিত। তবে বিশ্বব্যাপী এটির খুব একটা প্রচারণা নেই। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।
রানা প্লাজার উপর তৈরি করা পঞ্চম গবেষণা প্রতিবেদনে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর ৩ হাজার ৬৩২টি কারখানা পরিদর্শন করা হয়েছে। তবে এখনো একটি বড় অংশ পরিদর্শনের বাইরে রয়েছে। এর সংখ্যা ৯০৯টি।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গত তিন বছরে হালনাগাদ তথ্য নিয়ে এবারের প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ৫টি বিষয়কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। নিখোঁজ শ্রমিক, আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা, পুনকর্মসংস্থান, আইনি পরিস্থিতি ও আর্থিক সহায়তার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান প্রধান অলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সিপিডি ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- সিপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডিশনাল রিসার্চ ডিরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন, সাংসদ ইসরাফিল আলমসহ শ্রমিক নেতারা। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, স্পেন, সুইডেন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূতসহ আইএলও, অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স প্রতিনিধিরা।