এবিএনএ : ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনারে মানুষের ঢল নেমেছে। শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার মানুষ শহীদ মিনারগুলোতে চলে গেছেন। তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিটি স্থানে শিশু-বুড়ো-নারী সর্বস্তরের অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। ভাষা শহীদদের স্মরণ করতে সকলকে সুশৃঙ্খলভাবে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। খালি পায়ে গুটিগুটি এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। এদিকে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় পালন করা হচ্ছে মহান শহীদ দিবস। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই দেখা গেছে এমন চিত্র।
হৃদয় নিঙরানো ভালোবাসা ও পরম মমতায় ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিয়ে একাত্ম হয়েছে সব মানুষ। একুশের প্রথম প্রহরে বাংলা বর্ণমালার সৈনিকদের অবদান ও সংগ্রামের দিনগুলোকে স্মরণ করল বাংলাদেশ। রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সর্বস্তরের নাগরিকের পদভারে জেগে ওঠে স্মৃতির মিনার।
একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা এক মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। এরপর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তারা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
তিনি মন্ত্রীসভার সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়েও পৃথকভাবে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রীসভার সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদ দলীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছেন। এর পর জাপার পক্ষেও তিনি ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রাত ১টার কিছু পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ অন্যান্য নেতারা।
উল্লেখ্য, অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত, সফিউর, জব্বাররা। তাঁদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা। বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। যথাযথ মর্যাদায় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে পালিত হচ্ছে মহান শহিদ দিবস।