খেলাধুলালিড নিউজ

ভারতের ইতিহাসের লজ্জার হার

এবিএনএ : ভারতকে বড় ধরনের লজ্জায় ফেলে ৪ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করল অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউড। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৩৬ রানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ৯০ রান। এই মামুলি টার্গেট সহজেই উতরে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৮ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয় অজিরা।

ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ২৪৪ রানের জবাবে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াও। স্বাগতিকদের ১৯১ রানে অলআউট করে প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড পেয়েছিল সফরকারিরা। ম্যাচের এমন সমীকরণ কাজে লাগিয়ে বড় লক্ষ্য স্বাগতিকদের বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়ার কথা ছিল কোহলিদের। কিন্তু উল্টো দ্বিতীয় ইনিংসে পুরো দল মিলেও আর ৫৩ রান যোগ করতে পারেনি, অলআউট হয়েছে মাত্র ৩৬ রানে। তাই অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৯০ রানের।

অ্যাডিলেটে আজ শনিবার ৬২ রানে এগিয়ে থেকে ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল ভারত। ওপেনার পৃথ্বী শ সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন দ্বিতীয় দিন শেষ সেশনেই, দিনশেষে তাদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৯ রান। এর সঙ্গে আজ আর মাত্র ২২ রান যোগ করতেই পরের ৮ উইকেট হারায় ভারত, শেষপর্যন্ত ইনিংস থামে ৩৬ রানে।

ভারতকে অলআউট করতে দেড় ঘণ্টাও নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। কামিন্স ও হ্যাজলউডের নিখুঁত লাইন-লেন্থের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভারতের ব্যাটসম্যানরা। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে যেখানে জবাবই খুঁজে পায়নি ভারতের ব্যাটসম্যানরা, সেখানে দ্বিতীয় ইনিংসে খুব সাবলীলভাবেই খেলেছেন অসিদের দুই ওপেনার জো বার্নস ও ম্যাথু ওয়েড। ওয়ানডে ক্রিকেটের মেজাজে খেলে রান করতে থাকেন এ দুজন। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৭০ রান, তাও মাত্র ১৭.২ ওভারে।

মনে হচ্ছিল কোনও উইকেট না হারিয়েই জিতে যাবে স্বাগতিকরা। কিন্তু ১৮তম ওভারে দুর্ভাগ্যজনক রানআউট হন ওয়েড। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে শট খেলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। উইকেটের পাশ থেকে না দেখেই থ্রো করে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন ঋদ্ধিমান সাহা। ফলে সমাপ্তি ঘটে ৫৩ বলে ৩৩ রানের ইনিংসের।

দুই ওভার পর দলের জয়ের মাত্র ৮ রান বাকি থাকতে সাজঘরে ফিরে যান তিন নম্বরে নামা মার্নাস লাবুশেনও। তার ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ৬ রান। তবে কোনও ভুল করেননি জো বার্নস। অপরাজিত ফিফটিতে ৬৩ বলে ৫১ রান করে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ ডানহাতি ওপেনার। স্টিভেন স্মিথ অপরাজিত ছিলেন ১ রানে।

এর আগে হাতে ব্যথা পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন ভারতের শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শামি। ফলে কার্যত ১০ উইকেটের পতন ঘটেনি, তবে ৩৬ রানেই শেষ হয়েছে তাদের ইনিংস। যা কি না টেস্ট ইতিহাসের পঞ্চম সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ এবং চলতি দশকে এর চেয়ে কম রানে থামেনি আর কোনও দলের ইনিংস।

প্রতিপক্ষকে ৩৬ রানে গুটিয়ে দেয়ার পথে সবচেয়ে বড় আঘাতটা হেনেছেন ২৯ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার হ্যাজলউড। মাত্র ৪ রানে তিনি পূরণ করেন ক্যারিয়ারের অষ্টম ফাইফার। শেষপর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৫-৩-৮-৫। অন্যদিকে কামিনসের বলেই হাতে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন শামি। ফলে হয়নি কামিনসের ফাইফার। তার বোলিং ফিগার ১০.২-৪-২১-৪।

ভারতের পক্ষে ব্যাট হাতে ন্যুনতম প্রতিরোধ গড়তে পারেননি কোনও ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ৯ রান করেছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল, হানুমা বিহারি করেছেন ৮ রান। রানের খাতা খোলার আগেই থেমেছেন তিনজন। টেস্ট ক্রিকেটে দলের কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কে যেতে না পারার মাত্র দ্বিতীয় ঘটনা এটি। এর আগে ১৯২৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন লজ্জায় পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button