এ বি এন এ : ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের সেই স্মৃতি আজও ব্রাজিল ভক্তদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়। প্রতিপক্ষ সেই জার্মানি। পরাজয়ের ব্যবধান ৭-১! সেই থেকে যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। আর অলিম্পিকে ব্যর্থতাই যেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের প্রতিশব্দ হয়ে গেছে! আজ আবারও অলিম্পিক মঞ্চে সেই জার্মানির মুখোমুখি হচ্ছে হোস্ট ব্রাজিল। ভক্তদের মনে শঙ্কা, আবারও কি ফিরে আসবে দুই বছর আগের সেই লজ্জাজনক স্মৃতি? বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ থেকে জার্মানি যেন তাদের চিরশত্রু। এই চিরশত্রুর বিরুদ্ধেই আজ সোনা জয়ের মিশনে নামবে ব্রাজিল। এর আগে তিনবার ১৯৮৪, ১৯৮৮ এবং ২০১২ অলিম্পিকে সোনার পদক জয়ের সামনে ছিল ব্রাজিল। কিন্তু প্রতিবার হেরে সন্তুষ্ট থাকতে হয় রুপার পদকে। এবার কী ব্রাজিল সেই ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারবে? পারবে বিশ্বকাপের সেই লজ্জার প্রতিশোধ নিতে? কোপা আমেরিকায় বিশ্রামে ছিলেন। রিও অলিম্পিকের শুরুতেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি নেইমার। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইরাকের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ে মহাবিপাকে পড়ে ব্রাজিল। সমালোচনার তীর ছোটে নেইমারের দিকে। এরপর পরবর্তী ম্যাচগুলোতে স্বরুপে ফেরেন এই ব্রাজিল তারকা। সেমিফাইনালে হন্ডুরাসের বিপক্ষে অনেকদিন পর স্বরুপে দেখা যায় ব্রাজিলকে। বিশ্বকাপের সেই দলে ছিলেন না তিনি। কারণ ইনজুরি। কিন্তু আজ অলিম্পিক ফাইনালে তিনিই ব্রাজিলের প্রধান অস্ত্র। অলিম্পিকের দল নির্বাচন যদিও অন্যরকম হয় তবুও বলা যেতেই পারে, ব্রাজিলকে জিততে হলে নেইমারকে আজ জ্বলে উঠতেই হবে। বিশ্বকাপসহ নিয়মিত ম্যাচগুলোর জন্য বয়সের ক্ষেত্রে তেমন ধরাবাঁধা নিয়ম থাকেনা। কিন্তু অলিম্পিকের দল নির্বাচনে সেই নিয়মের ঘেরাটোপে পড়তে হয়। অলিম্পিক ফুটবলে খেলোয়াড়দের অনুর্ধ ২৩ বছরের হতে হয়। ২৩ বছরের উপরে মাত্র ৩জন খেলার অনুমতি পায়। এখানেই আসল পরীক্ষা। কারণ এখানে চাইলেই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অভিজ্ঞদের খেলানো যায় না। ব্রাজিল ভক্তদের জন্য আশার খবর হলো, জার্মানির অধিকাংশ ফুটবলাররাই এত বড় ম্যাচ কখনো খেলেননি। কিন্তু যে দলটি এই অনভিজ্ঞদের নিয়ে ফাইনাল পর্যন্ত এসেছে তাকে নিশ্চয়ই হেলাফেলা করবে না ব্রাজিল। ব্রাজিল ফুটবল দলের অলিম্পিক কোচ রোজারিও মিকালি বিশ্বকাপের সঙ্গে আজকের ম্যাচের কোন তুলনা করতে নারাজ। তিনি বলেছেন, “এই দুটি ম্যাচের মধ্যে কোন সম্পর্ক নেই। অতীতে কী হয়েছে জানিনা, তবে আজকের এই অলিম্পিক ফাইনাল একটি অসাধারণ ম্যাচ হতে চলেছে।” অপরদিকে উত্তেজনা ছড়িয়েছে জার্মান শিবিরেও। জার্মান ডিফেন্ডার নিকলাস বলেছেন, “ম্যাচটি নিয়ে যে কী পরিমাণ উত্তজনা বোধ করছি তা ভাষায় বর্ননা করা যাবে না। এটি শুধু দুই দেশের মর্যদার প্রশ্ন নয়; আজকের ম্যাচটি হবে বিশ্ব ফুটবলের একটি অনন্য আয়োজন।” রিও’র বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ২:৩০ মিনিটে শুরু হবে এই মহাকাব্যিক ফাইনাল। দর্শকরা আরেকটি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ দেখতে যাচ্ছেন তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।