এবিএনএ : ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর আজ শেষ হচ্ছে। করোনা মহামারির সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে এবারের মেলার সময়সীমা বাড়ছে না। প্রথমবারের মতো রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল মোটামুটি সন্তোষজনক। ছুটির দিনগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। মেলার স্টলগুলোতে বেচাকেনায় সন্তুষ্ট নন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বিক্রির লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তবে খুশি স্থানীয় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। এদিকে মেলায় যমুনা ইলেকট্রনিক্সের প্রিমিয়াম স্টলে দেশীয় মানসম্মত পণ্যে ক্রেতাদের দারুণ আগ্রহ ছিল। বিশেষ ছাড় দেওয়া আর হোম ডেলিভারি ফ্রির ঘোষণায় ব্যাপক চাহিদা ছিল যমুনার পণ্যে। এমনটাই দাবি করেছেন যমুনা ইলেকট্রনিক্সের ব্র্যান্ড ম্যানেজার শরীফ আব্দুল্লাহ।
মেলায় ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা নিয়ে হতাশার কথা জানান। তারা বলেন, মেলার শুরুতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া দর্শনার্থী ও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। নতুন স্থায়ী ভেন্যু হওয়ায় যে পরিমাণ মানুষজন কৌতূহল নিয়ে ঘুরতে এসেছেন সে অনুযায়ী ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তবে ব্যতিক্রম মন্তব্য করেছেন দেশীয় পণ্যের স্টলের বিক্রয় কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, মেলায় আকর্ষণ বাড়াতে সব পণ্যে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। পাশাপাশি হোম ডেলিভারিতে ফ্রি ঘোষণা করায় বেশ সাড়া পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মেলা প্রাঙ্গণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বেশকিছু পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ। মাস্ক না পরা ও স্বাস্থ্যবিধি ভাঙায় জরিমানা করা হয় নিয়মিত। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার বিধিনিষেধের প্রভাবে তুলনামূলক দর্শনার্থী ও ক্রেতা কম ছিল। ফলে বেচাকেনাও আশানুরূপ হয়নি।
মেলায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, মেলায় ব্যবসায়ীরা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। তবে বিধিনিষেধ থাকায় অনেকেরই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। ব্যবসার চেয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা জরুরি। তবে এবারের মেলা সফলভাবে শেষ হচ্ছে। ইউপি সদস্য রিটন প্রধান বলেন, মেলাকে সফল করতে স্থানীয়রা সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ীদের লক্ষ্যপূরণ হয়নি দাবি সঠিক নয়। স্বাচ্ছন্দ্যে শহরের চেয়ে গ্রামের লোকজন কেনাকাটা করেছেন। এতে সবাই খুশি।
ঢাকা সুইটস অ্যান্ড বেকারির মালিক আব্দুর রহিম বলেন, মেলায় স্থানীয় লোকজনের অংশগ্রহণ ছিল বেশি। এত বছর ঢাকায় হওয়াতে গ্রামের লোকজন তেমন যেতেন না। এবার সবদিক দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় শহরের চেয়ে গ্রামের লোকজনই বেশি হয়েছে। ফলে স্বল্পমূল্যের পণ্য বেশি বিক্রি হয়েছে। মেলায় আগত গৃহিণী তাহছিনা আক্তার নিশাত বলেন, একই জাতীয় পণ্যের একাধিক স্টল ছিল কম। ফলে দর্শনার্থীরা মান ও মূল্য যাচাইয়ের সুযোগ কম পেয়েছেন। তাই অনেকেই কম কেনাকাটা করেছেন।মেলায় দর্শনার্থী প্রবেশের টিকিট বিক্রিতেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এমন তথ্য জানিয়েছেন টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান মীর ব্রাদার্সের কর্মকর্তা আবিদ হাসান হৃদয়। তিনি বলেন, যে অর্থ খরচ করে ইজারা নিয়েছেন তা ওঠানো যায়নি।