তথ্য প্রযুক্তিলিড নিউজ

কেন ফেসবুকের চাকরি ছেড়েছিলেন জাকারবার্গের বোন!

এবিএনএ: ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কোটি কোটি ভক্ত বিশ্বজুড়ে। এসব মানুষকে নতুন সংযুক্তির আওতায় এনেছেন তিনি। চেনা, অচেনা মানুষে মানুষে সেতুবন্ধন গড়ে দিয়েছে তার ফেসবুক। তার ওই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তার বোন র‌্যান্ডি জাকারবার্গ। কিন্তু তিনি তা ছেড়ে দিয়েছেন। কেন তিনি ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান ফেসবুক ছেড়েছেন! এমন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। এসব নিয়েই তিনি কথা বলেছেন। র‌্যান্ডি ২০০৪ সালে ফেসবুকে প্রথম যোগ দেন ভাই মার্ক জাকারবার্গের অনুরোধে।  লাইভ স্ট্রিমিং বিভাগে তাকে কাজ দেয়া হয়। র‌্যান্ডি বলেন, এক পর্যায়ে তিনি দেখতে পান সেই কর্মক্ষেত্রে তিনি একা মেয়ে মানুষ। এমনটা দেখে তিনি বিরক্ত হন। ফলে ওই কাজ থেকে বেরিয়ে যান। র‌্যান্ডি বলেছেন, তার বিলিয়নিয়ার ভাই মার্ক জাকারবার্গের সেই ফেসবুক ইনকরপোরেশনের অবস্থা ১০ বছর পরেও কোনো পরিবর্তন হয় নি। যেমন ছিল কর্মপরিবেশ তেমনই আছে। যখন তিনি ফেসবুকের অফিসে নিজেকে একা দেখতে পান তখন তার মধ্যে এক রকম ঘৃণা বাড়তে থাকে। ফলে তিনি কাজ বাদ দিয়ে নিজেই একটি কোম্পানি খুলে বসেন। এটিও সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক। এর নাম র‌্যান্ডি জাকারবার্গ ()। র‌্যান্ডি আরো বলেছেন, তার পিতা চেয়েছিলেন সন্তানরা কলেজে যাওয়া বাদ দিয়ে ম্যাগডোনাল্ডের একটি ব্যবসা পরিচালনা করুক। কিন্তু মার্ক জাকারবার্গ বা র‌্যান্ডি দু’জনেই বেছে নিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তার মধ্যে বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন মার্ক জাকারবার্গ। র‌্যান্ডি জাকারবার্গের বয়স এখন ৩৬ বছর। তিনি ২০১১ সালে ফেসবুক ছেড়ে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে ক্ষোভ- পুরুষের আধিপত্য রয়েছে দুনিয়ায়। টেক বা প্রযুক্তি দুনিয়ায়ও একই অবস্থা। এখানে নারীদের একপেশে করে রাখা হয়েছে। তার ভাষায়, সিলিকন ভ্যানিতে লিঙ্গ বিষয়ক বা নারীতে-পুরুষে যে জটিলতা তা আমার কাছে সব সময়ই জটিল মনে হয়েছে। ফেসবুকে আমি যা করেছি, সেই কাজকে আমি ভালবেসেছিলাম। কিন্তু সব রুমের ভিতর আমি ছিলাম একমাত্র নারী। এটা আমার কাছে মোটেও ভাল লাগে নি। সেখানে আমি অনেকদিন এভাবে কাজ করেছি। আমার মনে হতো আমি একটি সমস্যা সমাধানের অংশ হতে চাই। একটি সমস্যার অংশ হতে চাই না। তাই আমি সিলিকন ভ্যালির বাইরে পা রাখার সিদ্ধান্ত নিই। বুঝতে শিখি আমরা কোথায় হারিয়ে ফেলছি নারীদের। আমরা কিভাবে যুবতীদের কর্মশক্তিকে হারিয়ে ফেলছি।

র‌্যান্ডি তার ভাই মার্ক জাকারবার্গ সম্পর্কে বলেন, ফেসবুক হলো তার দর্শন। এটা তার কোম্পানি। এক পর্যায়ে আমিও নিজে একটা কিছু সৃষ্টি করতে চেয়েছি।
র‌্যান্ডি স্মরণ করতে পারেন ২০০৪ সালে কিভাবে তাকে ফেসবুকে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। ওই সময় ফেসবুক ইনকরপোরেশনে স্টাফ ছিলেন প্রায় ৫০ জন। ওই সময় থেকেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় কর্মক্ষেত্রে নারীদের একীভূত করা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। র‌্যান্ডি বলেন, আমি এমন একটি দুনিয়া দেখতে তৎপর ছিলাম যেখানে নারীদের অধিক হারে প্রতিনিধিত্ব থাকবে। আমি বুঝতে পারি না কেন ১৫ বছর পরেও এক্ষেত্রে খুবই সামান্য পরিবর্তন এসেছে।
র‌্যান্ডি বলেন, আমার পিতা চেয়েছিলেন আমরা কেউই যাতে কলেজে পড়তে না যাই। আমরা যেন ব্যবসা করি। বিনিয়োগ করি। কিন্তু আমরা সবাই তার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। এখন মনে হচ্ছে আমরা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি।
মার্ক জাকারবার্গ গেলেন হার্ভাড ইউনিভাসিটিতে। কিন্তু এক পর্যায়ে পড়াশোনা বাদ দিলেন। স্কুলে পড়াশোনার সময়েই তিনি একটি সামাজিক নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেন। পরে তা বিকশিত হয়ে ফেসবুক নাম ধারণ করে। এখন এই ফেসবুকের আর্থিক মূল্য ৪৮৮০০ কোটি ডলার। সম্প্রতি ফেসবুক ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। আইনি লড়াইয়ে পড়তে হয়েছে। এসব কারণে হয়তো তার আয়ের খাতে বড় একটি ধাক্কা লেগেছে। তা না হলে আরো বড় অংকের অর্থের মালিক হয়ে যেতো ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। মার্ক জাকারবার্গরা চার ভাইবোন। তারা হলেন র‌্যান্ডি (৩৬), মার্ক (৩৪) ডোনা জাকারবার্গ (লেখিকা, বয়স ৩২) ও আরিয়েলে (২৯)।
সবার বড় হলেও র‌্যান্ডি জাকারবার্গ নিজের প্রচার করেন না। তিনি নীরবে নিভৃতে তাকেন। তার বিখ্যাত ভাই মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি যেসব বিতর্কিত বিষয়ে আটকে যান তখন তার পাশে এসে দাঁড়ান তিনি।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button