জাতীয়বাংলাদেশলিড নিউজ

পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ মুছে দিতে চেয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী

এবিএনএ : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দীর্ঘদিন দেশে নিষিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল শুরু করেছিল, যারা এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেনি, পাকিস্তানের সেই প্রেতাত্মারাই বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সেটাই আজ প্রমাণিত।’

শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যতই মুছে ফেলার চেষ্টা করুক, ইতিহাস তার জায়গা করে নেবে। আজ ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। আজ যখন ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তখন কি তাদের লজ্জা হয় না?’

তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ ২৩ বছর স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পারে নাই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এটা জানতে পারে নাই— এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু হয় না।’

আর যেন কখনো পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ না পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব  ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে দাঁড়িয়ে আমার সেই দিনটির কথা মনে পড়ে, যেদিন এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। এখানে দাঁড়িয়েই তিনি বলেছিলেন— এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের ২৩ বছরের বঞ্চনা, শোষণ, নিপীড়নের কথা বলেছিলেন। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। ইনশাআল্লাহ আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালের সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশে পরিণত হবো।’

তিনি বলেন, ‘মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত থেকেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে— এই নাগরিক সমাজে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে নাগরিক কমিটির ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তৃতা করেন পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক— অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী এবং বাংলাদেশে ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিট্রিস কালদুল।

সমাবেশে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে ইউনেস্কোর প্রতিনিধির হাতে একটি ধন্যবাদ স্মারকও তুলে দেওয়া হয়।

নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরীল সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্যের ফাঁকে-ফাঁকে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সেখানে আবৃত্তি করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও কবি নির্মলেন্দু গুণ। একক সঙ্গীতায়োজনে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের মধ্যে সাজেদ আকবর, শাহীন সামাদ ও চন্দনা মজুমদার সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button