
এবিএনএ: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, গত দুই-তিন বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি। সোমবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার লার্ভা প্রজননস্থল শনাক্তকরণ ও ধ্বংসকরণে পক্ষকালব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে মেয়র এসব কথা বলেন। তবে এখনো মাঠে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসচেতনতামূলক দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যাচ্ছে না। সাঈদ খোকন বলেন, গত বছর চিকুনগুনিয়া ছিল, এবার নেই। তবে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। তবে সেটা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তিনি নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনার বাসাবাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ফুলের টব, এসির আউটারে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন। কোনো জায়গায় পাঁচ দিনের বেশি পানি জমতে দেবেন না। কেননা পাঁচ দিনের বেশি পানি জমে থাকলে এডিস মশার বংশ বিস্তারের সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনার একটু সচেতনতা আপনার প্রিয়জনের জীবনকে রক্ষা করতে পারবে।
ডিএসসিসির মেয়র বলেন, সোমবার থেকে আমাদের ৫৭টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ ক্র্যাশ কর্মসূচি হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা পেলে তা ধ্বংস করে দিয়ে আসবে। পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন করবে। আমাদের সঙ্গে পাশের সিটি কর্পোরেশনকেও ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ মশার কোনো স্থান নেই। এক জায়গার মশা অন্য জায়গায় চলে যায়। তিনি আরও বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুতই একটি ডেঙ্গুমুক্ত শহর গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এ জন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এ ক্র্যাশ কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তৃতা শেষে মেয়র নির্মাণাধীন নৌবাহিনীর তথ্যকেন্দ্র ভবনে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করেন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি শিক্ষার্থী ও দোকানিদের হাতে লিফলেট বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধিরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাহউদ্দীন, কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কাজল, হাসিবুর রহমান মানিক প্রমুখ। প্রসঙ্গত, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত রাজধানীতে ২ হাজার ৬৭০ জন নগরবাসী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন মারা গেছে। আর এখন দৈনিক ৩০-৩৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা যুগান্তরকে বলেন, এবার রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সংখ্যার বিবেচনায় গতবছরের চেয়ে কম হলেও জুলাই-আগস্টে প্রতিদিনই ক্রমশ ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে আমাদের কাছে আশঙ্কাজনক মনে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এডিস মশার কামড়ে এবার বেশির ভাগই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। হাতেগোনা কয়েকজনকে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
Share this content: