
এবিএনএ : দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া গতরাত থেকেই। সঙ্গে সকালের ঝড়ো হাওয়া ছাতা ধরে রাখতে পারছেন না কেউ। এতসব উপেক্ষা করে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আজ সোমবার থেকে বাস ও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।ঢাকার কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের এবং গাবতলীতে সকাল ৭টা থেকে বাসের টিকিট বিক্রি শুরু হয় ।দূর পাল্লার ট্রেন ও বাসের টিকিট সংগ্রহের জন্য যাত্রীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ভোর রাত থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।কমলাপুর স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে আজ দেওয়া হচ্ছে ২১ তারিখের যাত্রার অগ্রিম টিকেট। অগ্রিম টিকেট বিক্রির এই কার্যক্রম চলবে ১৬ জুন পর্যন্ত।আগাম টিকেট বিক্রির প্রথম দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের কাউন্টারে ভিড় ছিল বেশি। চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটের ট্রেনে চাহিদা এদিন তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়।পুরুষ কাউন্টারের দাঁড়িয়ে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এ কর্মকর্তা জানালেন, রাজশাহীর টিকেটের জন্য তিনি কমলাপুরে এসে বসে আছেন রোববার সন্ধ্যা থেকে। ইফতার, সেহেরি, দুটোই সেরেছেন স্টেশনে।এই কষ্টের ফলও মিলেছে। সকালে যখন কাউন্টার খুলল, জালাল তখন লাইনে সবার সামনে।নারীদের কাউন্টারে কথা হল সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মনজিলার সঙ্গে। দিনাজপুরের দ্রুতযান এক্সপ্রেসের টিকেটের জন্য রাত থেকে অপেক্ষার পর সকালে তা হাতে পেলেন। তিনি বেলেন, আজকে ভিড় একটু কম ছিল। এ কারণে সহজেই পেয়েছি। এখন ভালো লাগছে।সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্টেশনে আসেন রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি ‘সন্তোষজনক’।সার্বিক ব্যবস্থাপায় আমরা সন্তুষ্ট। আমরা কাউন্টারে বলে দিয়েছি টিকেট দ্রুত ছেড়ে দিতে হবে। যাত্রীদের যেন কষ্ট না হয়। ভিড় বেশি থাকায় নারী কাউন্টারের সংখ্যা একটি থেকে বাড়িতে দুটি করা হয়েছে। সেবা দেওয়ার জন্য যা করা দরকার আমরা করব।শুরুতেই এসি টিকেট শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ২৫ শতাংশ টিকেট অনলাইনে দেওয়া হয়। ৫ শতাংশ ভিআইপি কোটা, ৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে। বাকি ৬৫ শতাংশ টিকেট কাউন্টারে দেওয়া হয়। এজন্য এসি টিকেটের প্রাপ্যতা কমে যায়।তিনি জানান, কমলাপুর থেকে প্রতিদিন সব ট্রেন মিলিয়ে ৫৫ হাজারের মতো টিকেট দেওয়া হবে। আর আন্তঃনগর ট্রেনের জন্য ২২ হাজার ১২২টি টিকেট বিক্রি করা হবে।ঈদ সামনে রেখে টিকেট কালোবাজারি হচ্ছে না দাবি করে আমজাদ হোসেন বলেন, কালোবাজারি শূন্যের কোঠায়। আমরা কোনো টিকেট কালোবাজারি হতে দেব না। এজন্য রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কাজ করছে।আগাম টিকেটের ভিড়ে স্টেশনের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে রেল কর্মকর্তাদের বেশ তৎপর দেখা যায় সকালে।টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার আগেই সেখানে শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ শুরু করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। কেউ যাতে সিরিয়ালের বাইরে না দাঁড়ান, সে বিষয়টি তারা দেখছেন। এছাড়া শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে টিকেট প্রত্যাশীরাও কাগজে ‘সিরিয়াল’ দিয়ে রেখেছেন।অপরদিকে গাবতলী বাস স্টেশনেও একই চিত্র দেখা গেছে। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বরাবরের মতো এবারও রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যাবেন ঘড়মুখো মানুষ।বাসের টিকিট বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও হানিফ পরিবহনের মালিক কফিল উদ্দিন বলেন, আমাদের সংগঠনের আওতায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে চলাচলকারী বাসের টিকিট বিক্রি শুরু করছি। সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
Share this content: