আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দিতে সন্তানের জন্ম পিছিয়ে দিলেন টিউলিপ

এবিএনএ: ব্রেক্সিট ইস্যুতে পার্লামেন্টে ভোট দিতে চিকিৎসকের পরামর্শ উপেক্ষা করে সন্তানের জন্মদান দুইদিন পেছানোর ঝুঁকি নিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আজ মঙ্গলবার ব্রেক্সিটের ওপর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। টিউলিপ সেখানে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেবেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছিল সোম অথবা মঙ্গলবার সিজারিয়ান সেকশন করানোর। কিন্তু টিউলিপ সেই তারিখ বৃহস্পতিবারে পিছিয়ে দিয়েছেন। সন্তানের জন্মদানের চেয়েও ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে টিউলিপ বলেন, ‘চিকিৎসকের দেওয়া তারিখের থেকে এক থেকে দুইদিন পর আমার সন্তান পৃথিবীতে এলেও আমি খুশি যদি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক দেখতে পায় বিশ্ব।’ তবে খুব বেশি সমস্যা হলে সন্তানের স্বাস্থ্যকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন টিউলিপ। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাবে না থাকবে সেটি নির্ধারণ হবে আজ। টিউলিপ সিদ্দিকের দেরিতে সন্তান জন্মদানের খবর ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি ও ডেইলি মেইলসহ গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড কিলবার্নের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ। তার অ্যাজেলিয়া নামে দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। কন্যার জন্ম দেওয়ার সময় তার গর্ভকালীন জটিলতা দেখা দিয়েছিল। দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানের মূল তারিখ ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডায়াবেটিসসহ কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের তারিখ এগিয়ে সোমবার বা আজ মঙ্গলবার করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে টিউলিপ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তারিখ দুইদিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার করার অনুরোধ জানান।

ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ডকে ৩৬ বছর বয়সী টিউলিপ বলেন, ‘রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালের নিয়ম-কানুন খুবই কঠোর। গর্ভাবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতি আমার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামর্শ উপেক্ষা করে আমি সন্তান জন্মদানের তারিখ পিছিয়েছি।‘ ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেবেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছি।’ তিনি নারী তথা বিভিন্ন সমপ্রদায়ের মানুষকে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট করতে প্রক্সি বা ছায়া ভোটদানের নিয়ম করার আহবান জানান।

আজ ভোট দিতে টিউলিপকে তার স্বামী ক্রিস পার্সি হুইলচেয়ারে করে পার্লামেন্টে নিয়ে যাবেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সাধারণত গর্ভকালীন বা অন্য কোনো বড় সমস্যায় কেউ পড়লে তার পরিবর্তে বিরোধী পক্ষের একজন ভোটদানে বিরত থাকেন যাতে ভোটে কোনো প্রভাব না পড়ে। এটাকে ‘পেয়ার’ বলা হয়। কিন্তু গত বছর লিব ডেম এমপি জো সুইনসন গর্ভবতী হওয়ার কারণে ভোট দিতে পারেননি। তার ‘পেয়ার’ হয়েছিলেন টোরি দলের চেয়ারম্যান ব্র্যান্ডন লুইসের সঙ্গে। কিন্তু লুইস নিয়ম ভঙ্গ করে ভোট দিয়েছিলেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দুঃখও প্রকাশ করেছিলেন।

টিউলিপ বলেছেন, ‘ওই নীতিতে তার আর আস্থা নেই। অতীতের দৃষ্টান্ত দেখে তিনি ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’ জয়-পরাজয়ের ব্যবধান খুব সামান্যই থাকবে উল্লেখ করে টিউলিপ বলেন, ‘তাকে ভোট দিতে যাওয়ার জন্য কেউ চাপ দেয়নি। কিন্তু এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভোট। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। সে আমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে এবং আমার সিদ্ধান্তের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন আছে।’

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button