আন্তর্জাতিকলিড নিউজ

চীনের সংবিধানে স্থান পেল শি জিনপিংয়ের নাম এবং মতাদর্শ

এবিএনএ : চীনের বর্তমান নেতা শি জিনপিংয়ের নাম এবং তার মতাদর্শ তার দলের মেনিফেস্টো অর্থাৎ চীনের সংবিধানে ঢোকানোর এক প্রস্তাব অনুমোদন করেছে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি।

এখন থেকে তাকে চ্যালেঞ্জ করার যে কোনো পদক্ষেপকে কম্যুনিস্ট পার্টির শাসন ক্ষমতার বিরুদ্ধে হুমকি হিসাবে বিবেচনা করা হবে।

এর ফলে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি এবং মর্যাদার বিচারে মি শি এখন দলের প্রতিষ্ঠাতা মাও জেদংয়ের সমপর্যায়ে উঠে গেলেন। মাও জেদংয়ের পর তিনিই হয়ে উঠেছেন চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এবং প্রভাবশালী নেতা।

দলের মেনিফেস্টোতে ‘নতুন যুগে চীনা সমাজতন্ত্র নিয়ে শি জিনপিংয়ের মতাদর্শ’ ঢোকানোর এই প্রস্তাব অনুমোদনে বেইজিংয়ে গ্রেট হলে দলের ২,০০০ প্রতিনিধি হাজির হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলছেন, প্রস্তাবে কারো কোনো আপত্তি রয়েছে কিনা তা জানতে চাওয়া হলে উপস্থিত কম্যুনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিরা সমস্বরে চেঁচিয়ে ওঠেন – না নেই।

ফলে, এখন থেকে চিনা কম্যুনিস্ট পার্টির ৯ কোটি সদস্যের পাশাপাশি স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে কল-কারখানার শ্রমিকদের চিনা সমাজতন্ত্র সম্পর্কে বর্তমান নেতা শি জিনপিংয়ের ‘মতাদর্শ’ পড়তে হবে।

এর আগেও দাং শাওপিং সহ গুটিকয়েক নেতার ‘দর্শন’ বা ‘ভাবনা-চিন্তা’ দলের সংবিধানে স্থান পেয়েছে। কিন্তু মাও জেদং ছাড়া কোনো নেতারই দর্শনকে ‘মতাদর্শ’ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়নি।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এখন থেকে হয়তো মাও-এর রেড-বুকের মত শি জিনপিংয়ের মতাদর্শ সম্বলিত কোনো পুস্তিকা চিনে প্রায় বাধ্যতামূলক পাঠ্য হিসাবে আবির্ভূত হবে।

শি জিনপিংয়ের ‘মতাদর্শ’ আসলে কী?
প্রথম দেখলে বা শুনলে ‘শি জিনপিং মতাদর্শ’কে নেহাতই অস্পষ্ট কথামালা বলে মনে হতে পারে।

কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকেই চীনা কম্যুনিজম নিয়ে তিনি এসব কথাই বলে যাচ্ছেন।

তার ১৪টি মূলনীতিতে তিনি চীনের শাসন ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে কম্যুনিস্ট পার্টির ভূমিকাকে জোর দিয়েছেন। মি শির মতাদর্শের মধ্যে আরো রয়েছে :

-‘পরিপূর্ণ সংস্কার’ এবং ‘নতুন ভাবনা-চিন্তা’
-‘মানুষ এবং প্রকৃতির সহাবস্থানের’ প্রতিশ্রুতি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ জোর দিচ্ছেন শি জিনপিং।
-‘চীনা সেনাবাহিনীর ওপর কম্যুনিস্ট পার্টির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। ’
-‘এক দেশ দুই নীতি’ এবং ‘মাতৃভূমির একত্রীকরণ’ যেটাকে পর্যবেক্ষকরা ব্যাখ্যা করছেন হংকং এবং তাইওয়ানের ব্যাপারে মি শি’র অবস্থান।চীনা কম্যুনিস্ট পার্টিতে এখন শি জিনপিং শাসনামলকে ‘নতুন যুগ’ হিসাবে জোরালো-ভাবে প্রচার করা হচ্ছে।নতুন এই যুগকে দেখা হচ্ছে আধুনিক চীনের তৃতীয় অধ্যায় হিসাবে।প্রথম অধ্যায়টি ছিলো যখন মাও জেদং গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত চীনকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।

দ্বিতীয় অধ্যায় ছিলো যখন দাং শাওপিং চীনকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন।আর তৃতীয় অধ্যায়টি হলো বর্তমান সময় যখন শি জিনপিং চীনকে আরো ঐক্যবদ্ধ করেছেন, চিনের সমৃদ্ধি বাড়িয়েছেন এবং দেশের ভেতর এবং দেশের বাইরে চীনের প্রতিপত্তি এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button