
এবিএনএ: বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার পাগলা শ্যামনগর এলাকার মৃত সওকাত শেখের ছেলে আল মামুন ও তার বাহিনীর অত্যাচারে মৃত্যু আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে একই এলাকার মৃত নেয়ামত মেম্বারের এতিম কন্যা লাকি ও তার মা মর্জিনা বেগম। সরজমিন পরিদর্শনে জানা যায় সন্ত্রাসী আল মামুন তার চাচা নিয়ামত মেম্বার এর মৃত্যুর পর তিন কন্যা মনোয়ারা, সাথী, লাকি ও স্ত্রী মর্জিনা বেগমকে নিজ বাড়ি হইতে উচ্ছেদ এর জন্য তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে দফায় দফায় আক্রমণ করে।
এ ব্যাপারে একাধিকবার ফকিরহাট থানায় লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। ঘটনায় প্রকাশ মর্জিনা বেগম ও তার তিন কন্যা বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার পাগলা শ্যামনগর ৩২ নং মৌজায় ৫০৮ নম্বর খতিয়ানে ২৫ শতক জায়গায় বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতা আল মামুন ও তার সহযোগীরা উক্ত সম্পত্তি দখল নিতে ঘরবাড়ি ভাঙচুর,লাকি ও মর্জিনা বেগমকে মারধর ও বেশ কিছু গাছও কেটে ফেলেছে।
এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিনিধি সরজমিন পরিদর্শন কালে কথা হয় একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের সাথে তিনি ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন ৪০ বছর ওই জায়গা নিয়ামত মেম্বার ভোগ দখল করে আসছে, এখন হঠাৎ আল মামুন বলে ওর দাদা ওকে জায়গা দিয়ে গেছে। আমার জানা মতে ওর দাদা সুলতান মৃত্যুর আগে অসুস্থ ও পাগল ছিল,পাগল লোকে কি করে জায়গা দলিল করে দেয়?আর এত বছর কেন এই দলিলটা দেখায়নি আল মামুন ? এ ব্যাপারে আরো কথা হয় সালাম শেখ, মামুন শেখ, মোবারক ফকির, আফজাল, শাহিন প্রমুখ এর সাথে তারা সবাই বলেন মেম্বার তিনটি এতিম মেয়ে ও বিধবা বউকে রেখে গেছে সম্বল বলতে কিছুই নাই আছে এই ২৫ শতক জমি ওখানের নারকেল সুপারি বিক্রির পয়সা দিয়েই সংসার চলে ওদের তারা আলো আরো বলেন আল মামুন মাস্তান প্রকৃতির মাদক মাদক সেবী ওর হাত হইতে ভুক্তভোগী পরিবারকে বাঁচানোর জন্য প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানান।
এ ব্যাপারে আল মামুন বলেন আমি দলিল পাইছি দাদা পাগল ছিল কিনা জানিনা,দলিল বানাইছে আমার মা আর আমার বড় চাচা কেরামত।আমার মায়ের বিয়ে হয়েছে অন্য জায়গায় সেই ভালো করে বলতে পারবে কিভাবে দলিল বানিয়েছে। তম্ভ করে আরো বলে লাকি আর ওর মাকে এই বাড়ি থেকে নেমে যেতে হবে না হলে ওরা হারিয়ে যাবে। আল মামুনের বড় চাচা শেখ কেরামত আলী টেলিফোন এ বিষয়ে আলাপে বলেন আমার আব্বা সুলতান অসুস্থ ও জ্ঞানহীন ছিলেন আব্বাকে ভুল বুঝিয়ে জোর করে সত্তার কমান্ডার ও আল মামুন এর মা দলিল করে নিয়েছে, দলিলে আমার নামও দিয়েছে কিন্তু আমি কিছু জানি না,কোর্টে গেলে এই দলিল টিকবে না সবাই জানে।
এ ব্যাপারে বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক অধ্যাপক ফকির রেজাউদ্দিন রাজা বলেন, সুলতান মাহাজন অসুস্থ ও জ্ঞানীহিন ছিলেন এ অবস্থায় কি করে দলিল হয়েছে জানিনা, শুনেছি লাকি দলিল বাতিলের মামলা করেছে আশা করি বিজ্ঞ আদালত ন্যায় বিচার করবেন।ভুক্তভোগী মর্জিনা বলেন, আমার তিনটি মেয়ে কোন ছেলে নাই এইটুক জায়গার উপর বেঁচে আছি,রোজ রোজ আমার মেয়ে ও আমাকে মারধর করে শ্রীলতা হানির চেষ্টা করে, কারো কাছে কোথাও গেলে বিচার পাই না, আমার মেয়ে লাকি বাদী হয়ে কোর্টে দলিল বাতিলের মামলা করেছে ওই জায়গাটা যাতে আল মামুন ও তার সন্ত্রাসীরা দখল না করতে পারে এজন্য ১৪৪ এর আবেদন করেছে মাননীয় আদালতের কাছে সুবিচার পাব বলে আশা করি।
ফকিরহাট থানার এসআই মসতুবা জানান, বাগেরহাটের কোর্ট থেকে আমার কাছে একটি তদন্ত এসেছে উক্ত জমিতে দখল কার এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। আমি সরজমিন দুই বার গেছি প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলেছি, আল মামুনের আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলেছি সবাই বলে ওই সম্পত্তি টি দীর্ঘ ৩০-৪০ বছর নিয়ামত মেম্বার ই ভোগ দখল করে আসছিল, কিন্তু এই একমাস তিন দফায় আল মামুন ও তার সহযোগীদের দ্বারা জমিটি দখলের চেষ্টা করছে এবং কিছু গাছগাছালিও কেটে ফেলেছে। আমি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য আল মামুনকে বলেছি।
এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিনিধি মৃত সুলতান শেখ এর তিন মেয়ে হাওয়া বেগম, ছুটি বেগম,ফতে বেগম, ও ছেলে সালাম এর সাথে এ বিষয়ে ব্যাপক কথা হয়, তারা জানান, আমার আব্বা অসুস্থ ছিল তখন তিনি কিছুই বুঝতেন না তাকে দিয়ে জোর করিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে আল মামুনের মা ও সত্তার কমান্ডার আমার বাপের কাছ থেকে জায়গা লিখে নিয়েছে।ওই দলিলটি এতদিন দেখায়নি আল মামুন, ৪০ বছর ওই জায়গা আমাদের ভাই নেয়ামত মেম্বার খাচ্ছিল, ভাইয়ের কবরটি ওই জায়গায়, আমাদের ভাই নেয়ামত মেম্বার মারা গেছে ২ বছর হয়েছে, এখন আল মামুন ওদেরকে এখান থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে। তারা সবাই আল মামুনের বিচার দাবি করে উক্ত জালিয়াতির দলিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
Share this content: