
এবিএনএ: দুই শিক্ষার্থীকে পিষে মারা জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের নিবন্ধন ও রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বলেন, ইতিমধ্যে বাস দুটির রুট পারমিট ও নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছেন। পাশাপাশি লাইসেন্সবিহীন চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আজ সকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে গত সোমবার পরিবহনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এমন নোমানকে র্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রোববার দুপুরে কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও নয়জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো শহীদ রমিজউদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম (১৬)।
কুর্মিটোলায় বিমানবন্দরগামী সড়কে গত রোববার দুপুরে জাবালে নূর পরিবহনের এই বাসের চাপায় নিহত হয় দুই শিক্ষার্থী। জাবালে নূরের এই বাসের খোঁজে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মিরপুর ১০ নম্বর কার্যালয় সূত্র জানা যায়, দুটি বাসের একটির (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৬৫৭) ফিটনেসের মেয়াদ দুই বছর আগে শেষ হয়। আর ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদও এখন নেই। অন্য বাসটিরও কোনো রুট পারমিট নেই। ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৬৫৭ নম্বরের বাসটির মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলে জানা গেছে। অন্য বাসটির মালিকের নাম জানা যায়নি। একটি ব্যাংকের অর্থায়নে বাসটি কেনা হয়েছে বলে জানা গেছে।পরিবহন খাতের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাবালে নূর পরিবহনের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। নৌপরিবহনমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পরিবহন জগতে প্রভাবশালী পরিচালক হিসেবে শাজাহান খানের শ্যালক নান্নু মিয়ার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আছে। নিহত দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলমও পরিবহনের শ্রমিকনেতা। মহাখালী বাস টার্মিনালের একটি পরিবহন কোম্পানির চালক তিনি। জানতে চাইলে জাবালে জাকির হোসেন গত সোমবার বলেন, পরিবহননেতা হিসেবে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, আগারগাঁও, মিরপুর ১০, কালশী, বিশ্বরোড, এয়ারপোর্ট, উত্তরা ও আবদুল্লাহপুর রুটে জাবালে নূর পরিবহনের একক আধিপত্য। রুটে কোম্পানির ৫০টির মতো বাস চলছে। বাস মালিক সমিতির বিভিন্ন বৈঠকে এই পরিবহনের চালকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও নান্নু মিয়ার কারণে কেউ উচ্চবাচ্য করেন না। তবে দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর সোমবার জাবালে নূর পরিবহনের কোনো বাস রাস্তায় চলেনি।
Share this content: