আমেরিকা

ট্রাম্পকে সরাতে আন্দোলনে যাচ্ছে মার্কিনিরা

এবিএনএ : ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না মার্কিনিরা।

এজন্য ধর্মান্ধ ও ঘৃণা সৃষ্টিকারী ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়াতে নির্বাচনের পর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

জয়লাভের পর কোনো প্রেসিডেন্টের এমন বিক্ষোভের মুখে পড়ার বিষয়টি মার্কিন ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের যোগ করেছে। আন্দোলনের ধারবাহিকতায় শুক্রবারও যুক্তরাষ্ট্রের রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন ট্রাম্পবিরোধীরা। রাতের আকাশে জ্বলেছে বিক্ষোভের মশাল। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে রাজপথ থেকে গলিপথে, চলেছে ভাংচুর এবং পুলিশি ধরপাকড়। দেশটির মিয়ামি, আটলান্টা, ফিলাডেলফিয়া, নিউইয়র্ক, স্যান ফ্র্যান্সিসকো, অরিগন ও পোর্টল্যান্ডের রাস্তায় শুক্রবার রাতেও হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। তারা বিক্ষোভ থেকে অভিবাসী, নারী ও মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়া ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি তুলছেন।

শুক্রবার মিয়ামির বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে রাজপথ অবরোধ করেন। এ সময় তারা রাস্তার দুই পাশের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। নিউইয়র্কে ওয়াশিংটন স্কয়্যার পার্ক ও টাম্প টাওয়ারের বিপরীতে অবস্থান নেন অনেক বিক্ষোভকারী। এদিন অবশ্য ধরপাকড় তেমন একটা হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাম্পবিরোধীদের অনেককেই ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ।

এদিকে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ দিনে দিনে আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। শনিবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ভারী জমায়েতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। নিউইয়র্কের ইউনিয়ন স্কয়ারে বিক্ষোভের জন্য ইতিমধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল যাবে ট্রাম্পের বাড়ি, তার কর্পোরেট অফিসেও। আরও রয়েছে অনেক পরিকল্পনা। নিউইয়র্কে বিক্ষোভের প্রচারণার আয়োজকরা তাদের ফেসবুক পোস্টে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘রাস্তায় আমাদের সঙ্গে যোগ দিন! ট্রাম্প এবং তার গোঁড়ামি এজেন্ডা রুখে দাঁড়ান।’ কর্মসূচি অব্যাহত রেখে জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভের চেষ্টা চালানোর পথে হাঁটছেন আন্দোলনকারীরা। ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প হোয়াইটহাউসের আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা গ্রহণ করবেন।

বিক্ষোভকারীরা ওই সময়ে লাখ লাখ মানুষের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তখন ওয়াশিংটনের রাস্তায় ১০ লাখ নারীর বিক্ষোভের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ মার্কিনিদের নাগরিক ও মানবিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করবে। অন্যদিকে নিজের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে পেশাদার বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ বলে অভিযোগ করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সফলভাবে একটি নির্বাচন সম্পন্ন করেছি। কিন্তু গণমাধ্যমের দ্বারা অনুপ্রাণিত পেশাদার বিক্ষোভকারীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এটি খুবই অন্যায্য।’

তবে তার এই বক্তব্য উল্টে শুক্রবার আরেক টুইটবার্তায় বিক্ষোভকারীদের প্রশংসা বানে ভাসিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘নির্বাচনের পর যারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে, তারা দেশের প্রতি ভালোবাসা ও আবেগ থেকেই এমনটি করছেন। আমাদের এই বিষয়টিকে ভালোবাসতে হবে। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে চাই এবং গর্বিত হতে চাই।’  উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর ভোটে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর থেকেই রাস্তায় নেমে আসে মার্কিনিরা। তারা কমপক্ষে ২৫টি শহরে বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা, ককটেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাঙচুর, যান চলাচলে ব্যাঘাত, সম্পদ ধ্বংস, ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা দাহ পর্যন্ত করছে।

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button