
এবিএনএ : তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টির উসকানি রোধ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সামরিক নয়, কূটনৈতিক তৎপরতায় বিশ্বাসী’ সোমবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ইনু বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সমস্যাটি জাতিগত, কোনো ধর্মীয় সমস্যা নয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজ দেশে পুনর্বাসনই এ সমস্যার একমাত্র সমাধান।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সামরিক নয়, কূটনৈতিক তৎপরতায় বিশ্বাসী। দ্বিপক্ষীয় কূটনীতির সাথে আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় তথা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমাধানের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’ ইনু বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং প্রতিবেশীর অভ্যন্তরীণ সমস্যার ফলে উদ্ভূত উদ্বাস্তু সমস্যাকে কূটনৈতিক মুন্সিয়ানার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকারের মানবিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর মধ্যে আমরা যে বিষয়গুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার পূর্ণ বাস্তবায়ন, গণহত্যা তদন্তে জাতিসংঘ কমিটি গঠন করা, অব্যাহত সংলাপ, সকল আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আরও সক্রিয় করা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের দুর্বল কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই রোহিঙ্গা সমস্যা শোচনীয়, ত্রাণ দিতে পারছে না সরকার।’তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কথা শুনে মনে হয় এই মানবিক বিপর্যয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পাশাপাশি সমগ্র বিশ্ব এবং জাতিসংঘ যে ব্যাপক তৎপরতায় কাজ করছে, তা তিনি দেখতে পারছেন না বা দেখতে চাচ্ছেন না। বরং জঙ্গি দমন আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য রোহিঙ্গা সমস্যা ব্যবহার করাই তার চক্রান্ত।’
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট সেনা-পুলিশের ৩০টি চৌকিতে হামলার পর দমন-পীড়ন শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর প্রাণভয়ে স্রোতের মতো বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। এরইমধ্যে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গার সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪০ হাজার শিশু বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাকারী সংগঠনগুলোর জোট ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি)।
Share this content: