এবিএনএ : রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত আইন তৈরি ও তদনুযায়ী সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে এ কথা বলেন দলের সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছি। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে দুইজন নারী কমিশনার রাখারও প্রস্তাব করেছি। তবে রাষ্ট্রপতির কথায় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি।
দলটির পক্ষ থেকে ৮ দফা প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
১. নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাই এর প্রতি তদ্রুপ মান্যতা ও মর্যাদা থাকতে হবে যাতে নির্বাচন পরিচালনা, তত্বাবধানে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্বাধীন পরিবেশে কাজ করতে পারে।
২. সংবিধানের ১১৮ বিধি বাস্তবায়নার্থে আইনের বিধানাবলি অনুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি আইন তৈরি করা। রাষ্ট্রপতি জরুরি ভিত্তিতে সংসদ অধিবেশন ডেকে বা অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৫ দিন থেকে এক মাস সময় লাগতে পারে।
৩. এই আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণ নিয়োগের জন্য নিন্মোক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল থাকবে। প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে এ সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠিত হবে। এ সাংবিধানিক কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির নিকট প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য নাম প্রস্তাব করবেন। রাষ্ট্রপতি তাদের পরামর্শমত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নিয়োগ করবেন।
৪. বিকল্প হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি গঠন করবেন। প্রধান বিচারপতি, দুদক চেয়ারম্যান, মহাহিসাব রক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ও অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের নিয়ে এ সার্চ কমিটি গঠন হতে পারে। এ কমিটি কমিশনের প্রতিটি পদের বিপরীতে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করবে। সার্চ কমিটির দেয়া নামের তালিকা সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। সেখান থেকে সংক্ষিপ্ত তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতি এ তালিকা থেকে নিয়োগ দেবেন।
৫. নির্বাচন কমিশনের সদস্য হবে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট, যার মধ্যে দুইজন নারী সদস্য থাকবেন।
৬. আইনশৃংখলা রক্ষাবাহিনীর সংজ্ঞায় দেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করার যে প্রস্তাব বিএনপি বা অন্য দলসমূহ করেছে তা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
৭. যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত বা দণ্ডিত হয়েছেন বা কোন সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এমন ব্যক্তিবর্গ যে কোন পর্যায়ে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ প্রস্তাবিত আইনে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৮. নির্বাচনে টাকার খেলা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হস্তক্ষেপ আইনে নিষিদ্ধ থাকতে হবে।
এর আগে বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা, পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড নুরুল হাসান, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমদ বকুল, কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ, কমরেড হাজেরা সুলতানা এমপি, কমরেড কামরূল আহসান, কমরেড অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন।