খেলাধুলা

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্রথম জয় মুশফিকদের

এবিএনএ : এবারের বিপিএলের আসরে প্রথম জয় তুলে নিল মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলস। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে ১৩০ রানের লক্ষ্যে নামা বরিশাল। ফলে, প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও পরাজয় মেনে নিতে হলো কুমিল্লাকে।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় মাঠে নামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা এবং মুশফিকুর রহিমের বরিশাল। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কুমিল্লা দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগে ব্যাটিং করে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পরও মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ১২৯ রান। কুমিল্লার হয়ে একাই লড়াই করেন ক্যারিবীয় তারকা মারলন স্যামুয়েলস। শেষ দিকে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন পাকিস্তানের পেসার সোহেল তানভীর।

ব্যাটিংয়ে নেমে রানের খাতা না খুলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও তিনি ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই তাকে ক্লিন বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ইমরুল কায়েসের পর খালিদ লতিফকে (১২) ফেরান আবু হায়দার রনি। পাকিস্তানি ওপেনারকে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করেন বরিশাল বুলস পেসার আবু হায়দার। দলীয় ২৫ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় কুমিল্লা।

দুই উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে রানের চাকা এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও মারলন স্যামুয়েলস। তবে, ইনিংসের অষ্টম ওভারে রান আউট হয়ে ফেরেন শান্ত। সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেন ১৬ রান। দলীয় ৫৭ রানের মাথায় কুমিল্লার চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে লিটন দাসকে ফেরান আল আমিন হোসেন। ব্যক্তিগত ৪ রানে সাজঘরের পথ ধরেন লিটন। ইনিংসের ১২তম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পরে বিদায় নেন পাকিস্তানের তারকা ইমাদ ওয়াসিম (১)। কুমিল্লার পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ৬৬ রানের মাথায়।

উইকেটের এক প্রান্ত মারলন স্যামুয়েলস ধরে রাখলেও অন্য প্রান্তে কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া চলতেই থাকে। ইনিংসের ১৪তম ওভারে থিসারা পেরেরা ফিরিয়ে দেন নাহিদুল ইসলামকে। আবু হায়দারের তালবুন্দি হয়ে বিদায় নেন ৪ রান করা নাহিদুল। ৭৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় কুমিল্লা। দলের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন মারলন স্যামুয়েলস। রায়াদ এমরিতের বলে আল আমিনের তালুবন্দি হন এই ক্যারিবীয়। ইনিংসের ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে স্যামুয়েলস করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৮ রান। তার ৪৮ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার। দলীয় ১১১ রানের মাথায় বিদায় নেন তিনি।

পাকিস্তানি পেসার সোহেল তানভীর ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন। মাত্র ১৯ বলে তিনটি ছক্কায় তিনি ৩০ রান করেন অপরাজিত থাকা এই পাকিস্তানি। তানভীরের সঙ্গে শেষ ওভারে ব্যাট করা কুমিল্লার দলপতি মাশরাফি (২) আবু হায়দারের বলে বোল্ড হন।

বরিশালের হয়ে আবু হায়দার দুটি উইকেট দখল করেন। একটি করে উইকেট নেন তাইজুল, আল আমিন, রায়াদ এমরিত এবং থিসারা পেরেরা।

১৩০ রানের লক্ষ্যে বরিশালের হয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন শামসুর রহমান এবং দিলশান মুনাবেরা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বরিশাল ওপেনার দিলশান মুনাবেরাকে ফিরিয়ে দেন ইমাদ ওয়াসিম। ১৯ বলে ১৫ রান করে স্যামুয়েলসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দলীয় ১৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে বরিশালের। এরপর উইকেটে সতর্ক থেকে জুটি গড়েন শামসুর রহমান এবং ডেভিড মালান। তবে, ইনিংসের ১১তম ওভারে বিদায় নেন শামসুর (১৬)। ২৬ বল মোকাবেলা করে বিদায়ের আগে ডেভিড মালানের সঙ্গে ২৯ রানের জুটি গড়েন তিনি। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।

ডেভিড মালান ইনিংসের ১৩তম ওভারে ব্যক্তিগত ২৬ রান করে বিদায় নেন। কুমিল্লার দলপতি মাশরাফির তালুবন্দি হন ৩৪ বলে তিনটি চার হাঁকানো মালান। মোহাম্মদ শরিফের বলে দলীয় ৬৯ রানের মাথায় বিদায় নেন তিনি।

এরপর রানের চাকা ঘোরান বরিশাল দলপতি মুশফিক এবং লঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা। এই জুটি থেকে আসে আরও ৪৯ রান। ইনিংসের ১৮তম ওভারে বিদায় নেন মুশফিক। প্রথম ম্যাচের মতো নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও রানের দেখা পান বরিশাল দলপতি। ২৩ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় তিনি করেন ৩৩ রান। থিসারা পেরেরা ২০ বলে ৩টি চার আর একটি ছক্কায় ৩৪ রান করে অপারজিত থাকেন। শাহরিয়ার নাফিস করেন অপরাজিত ১ রান। ১৮.৩ ওভার ব্যাট করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল।

এর আগে হার দিয়েই টুর্নামেন্ট শুরু করে কুমিল্লা ও বরিশাল। ৮ নভেম্বরের উদ্বোধনী ম্যাচটিতে চিটাগং ভাইকিংসের কাছে ২৯ রানে হেরে যায় মাশরাফি বাহিনী। একই দিন বরিশালকে আট উইকেটে হারায় ঢাকা ডায়নামাইটস। পয়েন্ট টেবিলে দু’দলের অবস্থান ছিল তলানিতে।

কুমিল্লা একাদশ: ইমরুল কায়েস, খালিদ লতিফ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মারলন স্যামুয়েলস, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), ইমাদ ওয়াসিম, নাবিল সামাদ, সোহেল তানভীর, মোহাম্মদ শরিফ, নাহিদুল ইসলাম।

বরিশাল একাদশ: শামসুর রহমান, দিলশান মুনাবেরা, ডেভিড মালান, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), শাহরিয়ার নাফিস, থিসারা পেরেরা, রায়াদ এমরিত, মেহেদি হাসান, আল আমিন হোসেন, তাইজুল ইসলাম, আবু হায়দার।

 

Share this content:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button